শুভব্রত মুখার্জি: এ যেন এক রূপকথার কাহিনী। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার একেবারে শেষ প্রান্তের শহর বসিরহাট। সেই বসিরহাটের অখ্যাত বিবিপুর গ্রাম থেকেই উঠে এসেছেন জিন্না মন্ডল। বাবা পেশায় জেলে। আর্থিক দিক থেকে একেবারেই স্বচ্ছল নয় পরিবার।
সেই পরিবারের ছেলে হয়েই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে বুঁদ ছিলেন জিন্না। কাঁধে ছোটবেলা থেকেই জোর ছিল বেশি। স্থানীয় কোচেদের পরামর্শে শুরু করেন পেস বোলিং। আর এই বোলিংয়ের হাত ধরেই গ্রামের ছেলে উঠে এসেছেন শিরোনামে। চলতি ওডিআই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের নেট বোলার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জিন্না।
নেটে তাঁর আগুনে গতি তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। বাবর আজম, ফখর জামান, মহম্মদ রিজওয়ানদের মুগ্ধ করেছে তাঁর গতি। তাঁর বোলিং এতটাই অবাক করেছে পাক তারকাদের যে সবাই একবাক্যে জিন্নাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
তবে নেট বোলার হিসেবে এটাই প্রথম অভিজ্ঞতা নয় জিন্নার। তিনি আইপিএলেও এক কাজ করেছেন। কলকাতা নাইট রাইডার্স দলের নেট বোলার ছিলেন তিনি। কেকেআরের নেটে তার দুরন্ত বোলিং চোখ এড়ায়নি তারকা অল-রাউন্ডার জ্যাক ক্যালিসের। তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন জিন্নার।
কেকেআরের নেটে বল করার পরেই সেন্ট্রাল ক্যালকাটা ক্লাব ঘরোয়া মরশুমের জন্য তাঁকে চুক্তিবদ্ধ করায়। তাঁর আগুনে গতিতে মুগ্ধ পাক ব্যাটাররা। বাবর আজমরা এতটাই মজে ছিলেন জিন্নাতে যে নিজের স্বাক্ষর করা একটি জার্সিও উপহার দেন তাঁকে। পাড়ায় টেনিস বলে খেলেই ক্রিকেটে হাতেখড়ি তাঁর। এইরকম এক টু্র্নামেন্ট খেলার সময়েই এক ক্রিকেট ভক্তের পোস্ট করা ভিডিয়ো চোখে পড়ে বাংলার ক্রিকেটার সৌরভ সরকারের।
জিন্নাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন সৌরভ। সেখান থেকেই উত্থান শুরু পেসারের। তিনি পাক দলের নেটে এতটাই ভালো বল করেন যে তার পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে প্রাক্তন পাক বোলিং কোচ মর্নি মর্কেলেরও। সিএবির ঘরোয়া লিগেও এই মুহূর্তে নিয়মিত খেলছেন জিন্না মন্ডল।