বিশ্বকাপে দ্বিতীয় অঘটন ঘটে নেদারল্যান্ডস বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে। প্রথম অঘটন ঘটায় আফগানিস্তান ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। এদিন ডাচ বাহিনী ৩৮ রানে পরাজিত করে প্রোটিয়াদের। দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার থেকে মিডিল অর্ডার কেউ দাঁড়াতে পারেনি স্কট এডওয়ার্ডস বাহিনীর সামনে। যদিও ডেভিড মিলার একটি লড়াকু ইনিংস খেলেন এবং শেষের দিকে নেমে দ্রুত রান তোলেন কেশব মহারাজ। এই জয়ে রীতিমতো চমকে দিয়েছে ক্রিকেট প্রেমীদের। ডাচ শিবির খুশি হলেও, এই হারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ রব ওয়াল্টার।
দলের ব্যর্থতা সম্বন্ধে ওয়াল্টার বলেন, 'যখন ওদের রান ৭ উইকেটে ১৪০, তখনও খেলাটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু ওখান থেকেই আমরা ম্যাচের গতি হারিয়ে ফেলি। তখনই ওরা ম্যাচটা ধরে নেয়। তবুও ৪৩ ওভার শেষে আমরা আশাবাদী ছিলাম যে নেদারল্যান্ডসের দেওয়া রান সহজেই করে ফেলবো। কিন্তু আমাদের শুরুটা খারাপ হয়। ওখানেই ওরা আমাদের ব্যাকফুটে ফেলে দেয়।'
তিনি আরও জানান, 'এছাড়াও অন্যান্য দিক থেকে আমরা অনেক ভুল করেছি। যেমন স্লো বল বা হার্ড লেন্থ বলের ক্ষেত্রে। পাশাপাশি আমরা অনেকগুলি অতিরিক্ত রানও দিয়ে ফেলেছি। যেটা ম্যাচের মোড় পাল্টে দিয়েছে। আমরা ২৪০ রান তাড়া করতে পারি। কিন্তু এই ম্যাচে সেটা হয়নি। আমরা শুরুটাই ভালো ভাবে করতে পারিনি। খুবই খারাপ শুরু হয়। চার দিন আগেই আমরা দুর্দান্ত খেলেছিলাম। কিন্তু এদিন খেলতেই পারলাম না। মোটেই ভালো গেল না এই ম্যাচটা। এক-আধটা ম্যাচ হতেই পারে। তবে এই ম্যাচের পর আমাদের অনেক কিছু ভাবাচ্ছে। যা আগামীকে একই ভুল না হয়। এমনকী বিশ্বকাপের আগেও আমার মনে হয়নি এই দলের কোনও সমস্যা রয়েছে বা খামতি রয়েছে। কিন্তু এখন কিছু করার নেই, এই দল নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। তবে আমরা এই ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারলাম।
ওয়াল্টার আরও জানান, 'প্রত্যেক দলই ম্যাচ জিততে চায়, তেমনই আমরাও ম্যাচ জয়ের জন্য খেলতে নামি। কিন্তু প্রত্যেকদিন যে একই ফল হবে তার কোনও মানে নেই। এর আগেও আমি যা বলেছি, একটি পাত্রে ডিম ফেলে দিলেই হবে না, ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং উভয় ক্ষেত্রেই ভালো পারফরম্যান্স কররতে হবে, তাহলেই একটি ম্যাচ জেতা সম্ভব।'
উল্লেখ্য, এই ম্যাচে হারের পর পয়েন্ট টেবিলে দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় স্থানে। পাশাপাশি এই জয়ের দ্বারা এই বিশ্বকাপে খাতা খুলল ডাচ বাহিনী। তবে এখনো খাতা খুলতে বাকি শ্রীলঙ্কার। তিনটি ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে তারা। মঙ্গলবারের ম্যাচ একটি বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ ছিল। ৫০ ওভারের বদলে ৪৩ ওভারের খেলা হয়। প্রথমে ব্যাট করে নেদারল্যান্ড ৪৩ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে তোলে ২৪৫ রান। অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস করেন ৭৮। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে এক বল বাকি থাকতে ২০৭ রানে সবকটি উইকেট হারায় টেম্বা বাভুমার দল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন ডেভিড মিলার। তিনি করেন ৪৩। এছাড়া কেশব মহারাজ করেন ৪০। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার পরবর্তী ম্যাচ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এবং নেদারল্যান্ডের পরবর্তী ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। তবে দেখার বিষয় এই হার থেকে কি শেখে দক্ষিণ আফ্রিকা। পরবর্তী ম্যাচগুলিতে কি পরিবর্তন আনতে চলেছে প্রোটিয়া বাহিনী। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা কি পারবে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রতিযোগিতায় ঘুরে দাঁড়াতে? নাকি জয় আবার হবে নেদারল্যান্ডসের?