চেন্নাইয়ের স্পিনিং ট্র্যাকে দু'রানে তিন উইকেট ফেলে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপ ফাইনালে আমদাবাদের পিচ থেকে একটুও সাহায্য পান, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা রাতের ঘুম উড়িয়ে দিতে পারেন বলে আতঙ্কে ভুগছিল ভারতীয় দলের থিঙ্কট্যাঙ্ক। আর সেই কারণেই নাকি ফাইনালে ঢিমেগতির পিচের পক্ষে সওয়াল করা হয়েছিল বলে সূত্র উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। আর সেই সিদ্ধান্ত যে কতটা ভুল ছিল, তা রবিবার প্রথম ৫০ ওভারেই প্রমাণিত হয়ে যায়। সেই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে কেন নিজেদের দলের ব্যাটিং বিভাগ এবং বোলারদের খাটো করে দেখল ভারতীয় দলের থিঙ্কট্যাঙ্ক? কেন ভরসা রাখা হল না?
বিশেষত অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সরা থাকলেও ভারতের তো জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজরা তো ছিলেন। যাঁরা এবারের বিশ্বকাপে ব্যাটিং পিচেও ঝড় তুলে দিয়েছেন। আর পেস বোলাররা যে পিচে সাহায্য পাবেন, সেই পিচে বুমরাহ-শামিরাও তো অজিদের ঘুম ছুটিয়ে দিতেন। সেই অতীতের মতো তো এখন আর ভারতের পেস বিভাগ নেই। একদিকে কেউ ভালো বোলিং করছেন, অপরদিকে কেউ রান হজম করে যাচ্ছেন। এবার বিশ্বকাপে তো বুমরাহ ও সিরাজের থেকে নিষ্কৃতি পেলে শামি আসছিলেন। ফলে চাপ থেকেই যাচ্ছিল।
ঠিক সেই বিষয়টি তুলে ধরেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন তারকা ব্রেট লিং। তাঁর মতে, পিচে বাউন্স থাকলে আদতে লাভ হত ভারতেরই। ফক্স স্পোর্টসে তিনি বলেন, ‘আমি বেশ অবাক হয়েছি। আপনি যদি ভারতীয় পেস বোলিং বিভাগ দেখেন, তাহলে নিঃসন্দেহে বলতে হবে যে এবারের বিশ্বকাপে আগুনে বোলিং করেছে তারা। পেসাররা ভালো খেলছিল। তাই আমি ভেবেছলাম যে অস্ট্রেলিয়ার টপ-অর্ডারের ব্যাটের কাণায় ক্যাচ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করবে ওরা।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি অবাক হয়েছি যে ঢিমেগতির এবং নীচু বাউন্সের উইকেট বানিয়েছিলেন। যা ওদের (ভারত) একেবারেই সাহায্য করেনি।’
তাছাড়া চেন্নাইয়ে দু'রানে তিন উইকেট পড়ে যাওয়া নিয়ে আদতে ভারতীয় থিঙ্কট্যাঙ্কের আতঙ্কিত হওয়ার কথাও নয়। কারণ চেন্নাইয়ে গ্রুপ লিগের প্রথম ম্যাচে মিচেল স্টার্কের যে বলে ইশান কিষান আউট হয়েছিলেন, সেটা চার মারার বল ছিল। অফস্টাম্পের মাইলখানেক দূরে বল ছিল। তাড়া করতে মারতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছিলেন। একইভাবে উইকেট ছুড়ে দিয়েছিলেন শ্রেয়স আইয়ার। মারার বল ছিল। মেরেছিলেন। কিন্তু সোজা ফিল্ডারের হাতে বল গিয়েছিল।
একমাত্র রোহিত শর্মা যে বলে আউট হয়েছিলেন, সেই বলটা ভালো ছিল। তারপর বিরাট কোহলি এবং কেএল রাহুলের উপর যে চাপটা তৈরি হয়েছিল, সেটা ওই তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার কারণে। তাঁরা সতর্কভাবে খেলছিলেন। তাতে অজি পেসাররা যে আতঙ্ক তৈরি করেছিলেন, সেটা ঠিক নয়। অজি পেসাররা সেটুকু ভালো করবেন, সেটা তো প্রত্যাশিত।