কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। তারপরই গ্রামবাংলা জুড়ে শুরু হয়ে যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ঠিক তার প্রাক্কালে বোমা–গুলি–খুন–জখমে তেতে উঠেছে কোচবিহারের দিনহাটা। পরিস্থিতি এমন আকার নিয়েছিল যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে এখানে আসতে হয়েছিল। এখানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছিল। বিজেপির উপরও হামলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই আবহে এবার শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। আর তার প্রাক্কালে হুঙ্কার ছাড়লেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ।
যদিও হিংসার অভিযোগ উড়িয়ে উদয়ন গুহ সংবাদমাধ্যমে জানালেন, বাংলার চারদিকে এখন উন্নয়ন হচ্ছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে পানীয় জল, সৌর আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই মানুষের কাছে যেতে গেলে উন্নয়নের রিপোর্ট কার্ড নিয়েই তাঁরা যাচ্ছেন। বিরোধীরা হিংসা করছেন এবং দুর্নীতির কথা বলছেন। কারণ ওরা কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি। মানুষ তাদেরকেই ভোট দেবে যারা পরিষেবা দিয়েছে, বিপদে পাশে থেকেছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসকে হিংসার রাস্তায় যেতে হবে না। উদয়ন গুহ আগে ফরওয়ার্ড ব্লকে ছিলেন এবং পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন।
কিন্তু বিরোধীরা হিংসা করলে কী করবেন? এই প্রশ্নের জবাবেই তিনি হুঙ্কার ছেড়েছেন এবং নিজে শান্তি চান বোঝাতে চেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘আমি কোনওদিন মস্তানি করিনি। ছাত্র অবস্থাতেও করিনি। তারপরেও মস্তানি করিনি। এখনও মস্তান আমাকে বলা যাবে না। তবে সোজা কথা বলতে ভালবাসি। কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আমি কখনও পালিয়ে যাইনি। সহকর্মীদের বিপদে ফেলে পিছিয়ে যাব এমন ঘটনা দিনহাটার বুকে এখনও ঘটেনি। তাই বিরোধীরা গোলমাল করলে কর্মীদের পাশে দাঁড়াব। আর গোলমাল না হলে পার্টি অফিসেই থাকব সারাদিন।’
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের এফআইআর, তোলপাড় বিশ্ববিদ্যালয়
শাসক–বিরোধী মিলে ভোট শান্তিপূর্ণ করা যায় না? এই প্রশ্নে বিরোধী দল বিজেপিকে নিয়ে দিনহাটার বিধায়ক কটাক্ষ করেছেন। তিনি ইতিহাসের প্রেক্ষাপট তুলে এনে বলেন, ‘রাজা পুরু এবং আলেকজান্ডার দুজনেই রাজা ছিলেন। তাই একজন রাজা অপরজন রাজার থেকে রাজাসুলভ ব্যবহার আশা করেছিলেন। কিন্তু একজন ভদ্রলোক ও আর একজন অভদ্রলোকের মধ্যে কথা বলে সমস্যা মেটানো খুব কঠিন।’ এখানে কাকে তিনি খোঁচা দিয়েছেন তাঁর নাম উল্লেখ করেননি। তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর সঙ্গে অহি–নকুল সম্পর্ক নিশীথ প্রামাণিকের। তাঁকেই উদ্দেশ্য করে এমন মন্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বাকি ৮টি নিয়ে কাল মহারণ।