বেড়াল থেকে রুমাল হওয়ার ঘটনা বইতে পড়েছেন অনেকেই। অনেকে বলেন বাংলার রাজনীতিও বর্তমানে অনেকটা সেই খাতে বইছে। কে যে কখন তৃণমূল আর কে যে কখন সিপিএমে সেটা বোঝা দায়। আবার এই তৃণমূল আবার রাত কাটতেই হয়ে গেলেন বিজেপি। এমন নজিরও রয়েছে। তবে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘটনাটা একটু অন্যরকম।
মেদিনীপুর সদরের কর্ণগড় দশ নম্বর অঞ্চলের বাসিন্দা সুকুমার ঘোষ ওরফে চন্ডী ঘোষ। ৫০ এর কোঠায় বয়স। সেই ৯৮ সাল থেকে তিনি তৃণমূল করতেন। ২০১৮ সালে তিনি পঞ্চায়েত সদস্যও হয়েছিলেন। দিন কয়েক আগেও দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে সেই চন্ডী ঘোষের বাড়িতেই রাত কাটিয়েছিলেন বিধায়ক জুন মালিয়া। ওই বাড়িতেই রাত্রিবাস করেছিলেন। রাত পর্যন্ত সংগঠন নিয়ে আনা আলোচনা। ওই বাড়িতেই রাতের খাওয়াদাওয়া। সব মিলিয়ে একেবারে হইহই ব্যাপার। সুকুমার ঘোষ আশা করেছিলেন পঞ্চায়েত ভোটে নিশ্চয়ই তিনি টিকিট পাবেন। কিন্তু ভোট আসতেই চরম হতাশ তিনি।
আর ভোট আসতেই রাগে অভিমানে সেই সুকুমার ঘোষই যোগ দিলেন সিপিএমে। দিন কয়েক আগেও যিনি সরকারের নানা প্রকল্প নিয়ে গলা ফাটাতেন, জোড়া ফুল আঁকা পতাকা নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন তিনি এখন লাল ঝান্ডা নিয়ে এলাকায় ঘুরছেন আর সুর চড়াচ্ছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
এনিয়ে সুকুমার ঘোষের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই উন্নয়নের সঙ্গী থেকেছি। নিজের টাকা খরচ করে দলের কাজ করেছি। কিন্তু তারপরেও দল আমাকে টিকিট দিল না। সেকারণেই বামেদের পক্ষে মনোনয়ন করলাম। আমি জোরের সঙ্গে বলছি ১০০ শতাংশ ভোটে জিতব। তবে যারা পুরানো সহকর্মী, বহুদিন তাদের সঙ্গে কাজ করেছি। তাদের ছেড়ে আসতে একটু কষ্ট তো হচ্ছেই।
এদিকে এমন কর্মীকে পাশে পেয়ে কিছুটা হলেও অক্সিজেন পেয়েছে সিপিএম। কারণ সুকুমার ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মী। তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান বাম নেতৃত্ব। তবে বাস্তবে কতদিন সুকুমার ঘোষ সিপিএমে থাকবেন তা নিয়ে সন্দেহটা থেকেই গিয়েছে। তবে জেতার ব্য়াপারে একেবারে নিশ্চিত সুকুমার ঘোষ।
তবে গোটা ঘটনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিধায়ক জুন মালিয়া। তিনি জানিয়েছেন, আমরা প্রবীনদের প্রণাম জানাই। তবে যাদের বিরুদ্ধে এক বা একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাদের সরিয়ে নতুনদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে। তবে যিনি চলে গিয়েছেন তাদের জন্য় দলের দরজা বন্ধ। তাকে বাই বাই জানাচ্ছি।