পঞ্চায়েত নির্বাচনে সার্বিক জয় আসেনি। বরং নিজের গড়েই জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয়েছে। তাই যেভাবেই হোক গ্রামবাংলার মাটিতে তৃণমূল কংগ্রেসকে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করা ঠেকাতে কংগ্রেস–সিপিএমকে কাছে আসার আহ্বান জানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ‘নো ভোট টু মমতা’র কথাও আগে বলেছিলেন। এবার এই নয়া স্ট্র্যাটেজি পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
কেন এমন করলেন সুকান্ত? এই প্রস্তাবে বেজায় খুশি সিপিএম। কিন্তু কংগ্রেস কোন পথে হাঁটবে বুঝতে পারছে না। কারণ মুর্শিদাবাদে বিজেপির ভোট বেড়েছে। এই আবহে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘বাংলায় রাজনৈতিক কোনও জোট হোক সেটা আমরা চাইছি না। বিজেপিই এই রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল। আমাদের পতাকার নীচে সমস্ত ভোটারদের এক হতে হবে। হয় তৃণমূল করুন, নয়তো বিজেপি করুন।’ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল বিরুদ্ধে ‘নো ভোট টু মমতা’ ডাক দেওয়ার আহ্বান জানান শুভেন্দু। শুভেন্দু রাজ্যের সব বিরোধীকে এক সুরে কথা বলতে আহ্বান করেন। তখন দলের অন্দরেই প্রশ্ন ওঠে, তৃণমূলের একমাত্র বিকল্প বিজেপি সেটা একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে প্রমাণিত।
বিরোধীদের একজোট করার কথা উঠছে কেন? সাগরদিঘিতে বাম–কংগ্রেস জোট জেতে। আর বিজেপি সেখানে তৃতীয় স্থানে নেমে যায়। এবার পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূলকে ঠেকাতে আবার বিরোধীদের একজোট হতে আহ্বান জানিয়েছেন বলে খবর। আর সুকান্ত মজুমদার সেই পথে হাঁটার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। বরং তিনি বলেছেন, ২০২৬ সালে সিপিএম–কংগ্রেস–তৃণমূল এক হয়ে লড়ূবে। তারই পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘নিজেরা হারছে। যতসব গল্প কথা।’
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের মুখে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম, আজ কোচবিহারে পৌঁছল সদস্যরা
আর কী জানা যাচ্ছে? এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান বিরোধী কারা সেটা নিয়ে তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে বিজেপি এবং সিপিএমের মধ্য়ে। বিজেপি এবার ভোট পেয়েছে ২২.৮৮ শতাংশ। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম–কংগ্রেস–আইএসএফের সম্মিলিত ভোট ২১ শতাংশ। সিপিএমের দাবি, প্রাপ্ত ভোট শতাংশের নিরিখে প্রধান বিরোধী তারাই। কারণ এই জোটের ভোট বেড়েছে। আর বিজেপির ভোট কমেছে একুশের নির্বাচনের নিরিখে। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘তৃণমূল–বিজেপির মধ্যে লড়াই হবে এটাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল। সেটা ভেঙে গিয়েছে। লড়াই কিন্তু চলবে।’ পাল্টা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘সিপিএম যতই গায়ের জোরে বলুক মানুষ ঠিক করবে, আসল বিরোধী কে। তবে হ্যাঁ, সিপিএম যে এখনও আছে তার প্রমাণ দিতে পেরেছে।’