২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রচার চলাকালীন নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, 'ভারতের যত কালো টাকা বিদেশের অ্যাকাউন্টে আছে, তা ফিরিয়ে আনলে দেশের প্রত্যেক জনের অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা করে দেওয়া যেতে পারে।' এরপর তিনি বিদেশ থেকে কালো টাকা দেশে ফেরানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। সেই থেকেই বিরোধীরা অভিযোগ করে আসছেন, মোদী নাকি দেশের সবার অ্যাকাউন্টে ১৫ বাখ টাকা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি করেছিলেন, এবং সেই প্রতিশ্রুতি তিনি রাখেননি। এবার মোদীর সেই ১৫ লাখি 'প্রতিশ্রুতি' নিয়ে বলতে গিয়ে বেলাগাম দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী বলেন, '১৫ লক্ষ টাকার অপেক্ষা করে অনেকে তো উপরে চলে গেল! আমরা ১৫ কোটি টাকার কথা বলছি।' অবশ্য দিলীপ কোন '১৫ কোটি টাকার' কথা এখানে উল্লেখ করেন, তা স্পষ্ট নয়। (আরও পড়ুন: ভোট প্রচারে গিয়ে হরির লুটে মজলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়)
আরও পড়ুন: BJP প্রার্থীর জয়লাভ কামনা মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইতের, দেখুন ভিডিয়ো
এদিকে স্বভাবতই দিলীপের এহেন মন্তব্যকে হাতিয়ার করে পালটা আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগ, এই ধরনের মন্তব্যের মাধ্যমে দিলীপ ঘোষ আদতে সাধারণ মানুষকে 'ছোট' করছেন। দিলীপের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'নরেন্দ্র মোদীর কাছে কেউ নিজে থেকে টাকা চাইতে যায়নি। তিনি নিজেই দাবি করেছিলেন যে বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনবেন। এরপর সবার অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা করে পাঠাবেন। তবে দিলীপ ঘোষ এই ধরনের কথা বলে মানুষকে উত্তেজিত করে তুলছেন।'
আরও পড়ুন: প্রচারে গিয়ে মহা বিপাকে মহুয়া, চরম বিশৃঙ্খলা TMC প্রার্থীকে ঘিরে
এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে 'কুকথা' বলায় দিলীপ ঘোষকে সেন্সর করেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তবে তারপরও তাঁকে থামানো যায়নি। সম্প্রতি জলপাইগুড়ির ঝড় নিয়েও বেলাগাম হয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'ঝড় তো উত্তরবঙ্গে শুরু হচ্ছে। ভোট ওইদিক থেকেই শুরু হচ্ছে। তাতে বিজেপির ঝড় শুরু হয়েছে। তাতেই সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে।' যে ঝড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল, তা নিয়ে এই ধরনের অসংবেদনশীল মন্তব্য করায় তখনও সমালোচিত হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তবে দিলীপ থেকে যান দিলীপেই। দু'দিন আগেই প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলীপ বলেছিলেন, 'এখনও দাদাগিরি শুরুই করিনি। ওরা এখন টুকঠাক করছে। যেদিন একটা ঘা মারব না! কামারের ঘা ওরা দেখেনি। সিধা হয়ে যাবে সব। যখন সভা করব তখন তৃণমূল দম নিতে পারবে না। ওদের প্রার্থীদের কেউ তাড়া করলে, মার খেলে মন্দিরে যাবে। ঠাকুরের পায়ে পড়তে হলে আগেই ঠাকুরের পায়ে পড়ুন। তাহলে মার খেতে হবে না। পিঠে মারের দাগ নিয়ে আর ঠাকুরের কাছে গিয়ে কী হবে।'