রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীকে কেন সরিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করলেন রাজ্যপাল?
এই সুপারিশের পেছনে রয়েছে গত ৩০শে মার্চের একটা ঘটনা। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্য়াম্পাসে তৃণমূলের অধ্য়াপক সংগঠনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল সেদিন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাত্য। এমনকী সেখানে ভোট প্রচার নিয়েও কিছু কথা হয় বলে খবর। এদিকে নির্বাচনী বিধি লাগু হওয়ার পরে এভাবে সরকারি ক্যাম্পাসের মধ্য়ে প্রচার করা কতটা সঙ্গত তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবার সেই ঘটনায় ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। তার জেরেই তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর সুপারিশ।
তবে এর আগেও ব্রাত্য বসুর সঙ্গেই রাজ্যপালের বাকযুদ্ধ হয়েছে। কিন্তু এত বড় সুপারিশের কথা আগে শোনা যায়নি। তবে ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, আমি দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে যদি রাজ্যপালকে সরানোর সুপারিশ করতাম তাহলে সেটা যেমন হাস্যকর মনে হত এটাও ঠিক তেমনই হাস্যকর। আমি কোনও নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করলে যে কোনও রাজনৈতিক দলের অধিকার আছে তা নির্বাচন কমিশনের নজরে আনার। কিন্তু রাজ্যপাল এমন একটি অভিযোগ তুলে নিজের সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করছেন এবং নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ও প্রকাশ্যে এনে ফেলেছেন। দ্বিতীয়ত ভারতের সংবিধানে অনুসারে কোনও রাজ্যের মন্ত্রীর অপসারণ বা নিয়োগের সুপারিশ করতে পারেন কেবলমাত্র মুখ্য়মন্ত্রী। রাজ্যপাল শুধু নিজের আসল রঙ দেখালেন না, নিজের সাংবিধানিক সীমাও লঙ্ঘন করলেন।
তবে এই ঘটনায় রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও দেখার।
এদিকে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য়ের সংঘাত নতুন কিছু নয়। সিভি আনন্দ বোস রাজ্যপালের চেয়ারে বসার পরে প্রথমদিকে সম্পর্ক ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু দিন যত গিয়েছে ততই জগদীপ ধনখড়ের প্রতিচ্ছবি দেখা গিয়েছে রাজভবনে। রাজ্য় সরকারের নানা ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। এনিয়ে তৃণমূলের তাবড় নেতৃত্ব কার্যত রে রে করে উঠেছেন বার বার। এদিকে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে নানা ইস্যুতে অতীতে সংঘাত হয়েছে রাজ্যপালের। তবে এবার সেই রাজ্যপালই ব্রাত্যকে একেবারে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর সুপারিশ করলেন।