বামফ্রন্ট–কংগ্রেস জোটে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে কোন্দল চরমে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানকে ফোন করে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতির খোঁজ নিয়েছেন আনন্দ শর্মা। যা নিয়ে সরগরম রাজ্য থেকে জাতীয় রাজনীতি। কারণ কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের প্রশ্ন তুলে টুইটারে আইএসএফের মত ‘মৌলবাদী শক্তি’র সঙ্গে হাত মেলানোর বিরোধিতা করেছিলেন আনন্দ। যা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী পাল্টা খোঁচা দিয়েছিলেন আনন্দকে। এবার অধীররঞ্জন চৌধুরীর পাশে দাঁড়ালেন সোনিয়া গান্ধী। তিনি জানিয়ে দেন, বিজেপিকে রুখতেই পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সঙ্গে জোট। সুতরাং নাম না নিলেও অধীরের পাশে তিনি দাঁড়ালেন এবং অন্যান্যদের বার্তা দিলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
এই বিষয়ে আবদুল মান্নান বলেন, ‘আনন্দ আমাকে ফোন করেছিলেন। আর আইএসএফ–কে সঙ্গে নিয়ে বাম–কংগ্রেস জোটের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। আমি তাঁকে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে সিদ্ধান্তের প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়েছি।’ আনন্দ শর্মার মতো যেসব নেতা প্রশ্ন তুলছেন তাঁদের রীতিমতো সতর্ক করে দিয়েছেন সোনিয়া। গত রবিবার ব্রিগেডের সভায় সংযুক্ত মোর্চার সঙ্গী আইএসএফকে নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কংগ্রেসের রাজ্যসভার এমপি প্রাক্তন মন্ত্রী আনন্দ শর্মা এই ধরনের জোটের সমালোচনা করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন জবাবে জানিয়ে দিয়েছেন, হাইকমান্ডের নির্দেশ মতোই তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। অহেতুক বিতর্ক তোলা উচিত নয়।
আনন্দও আইএসএফ নিয়ে বিতর্কের সরাসরি উল্লেখ না করে টুইটে লেখেন, ‘আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা বলতে চেয়েছি। আমরা যা বলেছি তা সঠিকভাবে দেখা প্রয়োজন। আমরা দলকে শক্তিশালী করতে চাই। আমরা এমন কিছু করতে চাই না যাতে দল দুর্বল হবে’। এদিকে এআইসিসির সাংবাদিক সম্মেলনে হাইকমান্ডের বক্তব্য স্পষ্ট করে রাজ্যসভার এমপি অভিষেক মনু সিংভি জানান, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির গুণ্ডামির রাজনীতি রুখতেই মূলত জোট হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে দলীয় প্রার্থী বাছতে স্ক্রিনিং কমিটি গড়ে দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। জে পি আগরওয়ালের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন মহেশ যোশি এবং নাসিম খান।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আনন্দ টুইটারে লিখেছিলেন, ‘আইএসএফ–এর মতো শক্তির সঙ্গে কংগ্রেসের সমঝোতা নেহরু–গান্ধীর ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবনার পরিপন্থী। ওই মঞ্চে বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি এবং সমর্থন লজ্জাজনক!’ পাল্টা দিতে ছাড়েননি অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেন, ‘এই মন্তব্যও অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক! কারণ সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, বিমান বসুরা সকলেই মঞ্চে ছিলেন। তাঁরা সবাই ‘মৌলবাদী শক্তি’র হাত ধরলেন, এই ধারণা ভাবিয়ে তুলেছে।’