‘রাজনৈতিক ইস্তাহার নয়, উন্নয়নের ইস্তাহার’ - সেই স্লোগানেই রাজ্যের মানুষের জন্য ‘১০ অঙ্গীকার’ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করলেন, আগের দু'বার যে ইস্তাহার প্রকাশ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস, তার ১১০ শতাংশ পূরণ হয়েছে। আগের দু'দফার কাজের খতিয়ান তুলে ধরে মমতা জানান, ২০১১ সালে যখন তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল, তখন রাজ্যের আয় ছিল ২৫,০০০ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে ৭৫,০০০ কোটি টাকা হয়েছে। বাংলার মানুষের মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হয়েছে বলেও দাবি করেন। সেইসব দাবির মধ্যে তৃতীয়বার রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরলে কী কী কাজ করবেন, তাও জানিয়েছেন মমতা। একনজরে দেখে নিন সেগুলি -
পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি তৈরি করা এবং ৩৫ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যসীমার বাইরে নিয়ে আসার উপর জোর দেওয়া হবে। সেজন্য বছরে তৈরি করা হবে পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান। সরকারি চাকরি, ১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্নভাবে সেই কাজ করা হবে। মমতা দাবি করেন, তৃণমূলের ১০ বছরে ১.৭৫ লাখ কর্মদিবস তৈরি হয়েছে।
আগামী মে থেকে বিধবাদের মাসিক ভাতা বেড়ে ১,০০০ টাকা হবে। সব শ্রেণির বিধবাদের সেই ভাভা দেওয়া হবে।
বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিনামূল্য রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে।
লাখ-লাখ বিধবা, প্রবীণদের বিশেষ ভাতা দেওয়া হয়। প্রতিটি পরিবারের মাসিক ন্যূনতম আয় সুনিশ্চিত করা হবে। রাজ্যের প্রতিটি পরিবারের মহিলারা পাবেন। বাংলার প্রতিটি জেনারেল ক্যাটেগরির পরিবারকে মাসে ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী বছরে ৬,০০০ টাকা দেওয়া হবে। তার ফলে উপকৃত হবে রাজ্যের ১.৬ কোটি পরিবার। তফসিলি জাতি এবং উপজাতি শ্রেণিভুক্ত পরিবারকে মাসে ১,০০০ টাকা হিসেবে বার্ষিক ১২,০০০ টাকা দেওয়া হবে। চাকরি করলেও সবাই পাবেন।
বছরে চার মাস ধরে চলবে দুয়ারে সরকার চলবে। অগস্ট-সেপ্টেম্বর এবং নভেম্বর-ডিসেম্বরে হবে।
যোগ্য পড়ুয়াদের জন্য ১০ লাখ টাকার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড আনা হবে। চার শতাংশ সুদ দিতে হবে। গ্যারেন্টার লাগবে না। সরকারই গ্যারেন্টার হবে।
তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলে ৬,০০০ টাকা নয়, কৃষকদের বার্ষিক ১০,০০০ টাকা দেওয়া হবে। সুবিধা পাবেন রাজ্যের ৬৮ লাখ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক। পাশাপাশি কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী, অন্যান্য বৃত্তি পাবে।
বাংলা আবাস যোজনার মাধ্যমে ৩৩.৭ লাখ বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। আরও ২৫ লাখ বাড়ি তৈরি করা হবে।
মাহিষ্য, তিলি, তামুল, সাহার মতো সম্প্রদায়ের মানুষরা ওবিসি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত নন। কিন্তু মণ্ডল কমিশনের তালিকায় আছেন। তাঁদের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনার একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। যাতে ওবিসি সংক্রান্ত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পান। মালদহের কিষান জাতির ক্ষেত্রেও একইরকম সুবিধার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন মমতা।
পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার জন্য একটি বিশেষ উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হবে। পাহাড় এবং তরাই-ডুয়ার্সের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা হবে।
১০ লাখ ক্ষুদ্র, ছোটো এবং মাঝারি শিল্পকেন্দ্র তৈরি করা হবে।