বাম–কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ভেস্তে যেতে পারে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকির তৈরি ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের। এখানে দুটি সমস্যা দেখা দিয়েছিল। এক, সিদ্দিকির লেখা চিঠি অনুযায়ী, তাঁরা ৪৪টি আসন দাবি করেছিলেন। যা বাম–কংগ্রেস কেউই মেনে নিতে রাজি নয়। দুই, সিদ্দিকির দলের সঙ্গে জোট হয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল এআইএমআইএমের। সেটা মেনে নিতে রাজি নয় বাম–কংগ্রেস। তাই এই জোট ভেস্তে যেতে বসেছে বলে খবর।
বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় এআইএমআইএম। তাই ওয়াইসি নিজে ফুরফুরা শরিফে দেখা করতে এসেছিলেন গত ৩ জানুয়ারি। আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে দু’ঘন্টা বৈঠক করেছিলেন। সিদ্দিকির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস সরকার সংখ্যালঘুদের জন্য কিছু করেনি। তাঁদের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ২১ জানুয়ারি আব্বাসউদ্দিন সিদ্দিকি নতুন দল ঘোষণা করেন। তারপর বাম–কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার জন্য চিঠি দেন।
এরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। বলা হয়, বাম–কংগ্রেস আসলে বিজেপিকে তলে তলে সাহায্য করছে। কারণ ওয়েইসির দলের সঙ্গে যাদের জোট আছে, তাদের সঙ্গে জোট করতে চলেছে বাম–কংগ্রেস। যারা বিহার নির্বাচনে মুসলিম ভোট কেটে বিজেপিকে সাহায্য করেছিল। রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী জানান, এই রাজ্যে এআইএমআইএম কিছু করতে পারবে না। তাঁদের এখানে কোনও জায়গা নেই। এরপরই বেঁকে বসে বাম–কংগ্রেস। ফলে জোট ভেস্তে যায়।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট নিয়ে একটি চিঠি লেখেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে। সেখানে তিনি লেখেন, এই জোট হলে তা সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির কাছে একটা বাজে বার্তা যাবে। এরপর বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘আমরা ৪৪টি আসন ছাড়ার অবস্থা্য় নেই। তবে সিদ্দিকির চিঠি নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’ সুতরাং জোট যে ভেস্তে যাচ্ছে তা মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘আসন সমঝোতা বা জোট নিয়ে আমার সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি সিদ্দিকির।’ সিপিআইএমের পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা হয়েছে সিদ্দিকির। আমি তাঁকে বলেছি, এআইএমআইএমেের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া সম্ভব নয়।’ এরপরই বেঁকে বসেন সিদ্দিকি। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে জোটের প্রস্তাব দেয় এআইএমআইএম। বাম–কংগ্রেস কখনও আমাদের বলে দিতে পারে না কার সঙ্গে আমরা জোট করব এবং জোট করব না। তাঁদের হঠাৎ কেন অ্যালার্জি হল? সেই উত্তর পেলে আমরা ওই অ্যালার্জির ওষুধের ব্যবস্থা করব। দুটি দলই মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম অক্সিজেন দিয়ে বাঁচাব। কিন্তু তারা যখন অক্সিজেন চায় না তখন তাদের শেষকৃত্যে অংশ নেব।’