বুথের বাইরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভোটাররা। সিংহভাগ ভোটারের মুখেই মাস্ক। কয়েকটি বুথের বাইরে দূরত্ব বিধি বজায় রাখার জন্য আলাদা করে সাদা দাগও দেওয়া রয়েছে। বেশ কিছু বুথে থার্মাল স্ক্রিনিংয়েরও ব্যবস্থা। কোথাও বড় কোনও অশান্তির খবর নেই। এটাই ছিল শনিবার ভোটের পাহাড়ের সার্বিক ছবি। অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করলেন পাহাড়ের তিন কেন্দ্রের ভোটাররা। সেটাও একেবারে উৎসবের মেজাজে। কার্যত করোনা সতর্কতা বিধি মেনে কীভাবে ভোট করতে হয় সেটা দেখিয়ে দিল দার্জিলিং পাহাড়।
রাজনৈতিক মহলের মতে, এবারের ভোট যেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুংয়ের কাছে কার্যত অগ্নিপরীক্ষা। আগামী দিনে আদৌ পাহাড়ের রাজনীতির রাশ তাঁর হাতে থাকবে কীনা সেটাও কার্যত এদিন নির্ধারিত করে দিলেন পাহাড়বাসী। তবে ফলাফল জানার জন্য আরও কয়েকদিনের অপেক্ষা। বিমল গুরুং, রোশন গিরি জুটি , নাকি বিনয় তামাং আগামী দিনে কার কথা শুনবে পাহাড়? নাকি মন ঘিসিংয়ের হাত ধরে নতুন শক্তি হিসাবে পাহাড়ে ফের উঠে আসবে জিএনএলএফের নাম? এনিয়ে নানা চর্চা চলেছে পাহাড় জুড়ে। কিন্তু রাজনৈতিক এই ক্ষমতা ধরে রাখার বাইরে পাহাড়বাসী এদিন কার্যত জানিয়ে দিলেন, তাঁরা শান্তির পক্ষে।
তবে কথায় আছে পাহাড়বাসীর মন পড়তে পারেন মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। হয়তো সেকারণেই প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর ভোট দিয়ে সেই শান্তির পক্ষেই এদিন সওয়াল করেন বিমল গুরুং। পাতলেবাসের বাড়িতে বসে তিনি বলেন, 'হিংসা দিয়ে উন্নয়ন হয় না। বিজেপির জনসমর্থন নেই। গ্রাউন্ড জিরোতে ওদের কোনও প্রভাব নেই। রাজনীতির পথ হোক সহজ সরল। সন্ত্রাস, গুলি এসব দিয়ে রাজনীতি হয় না'। অনেকেই বলছেন ২০১৭ সালের পাহাড়ের অশান্তির ছবির পাশে এ যেন অন্য বিমল। আর জিএনএলএফ সভাপতি মন ঘিষিং ভোট দিয়েই বললেন, ‘এবার খেলা শেষ। পাহাড়ে সমস্যা মেটাবে বিজেপি। আমরা ন্যায় বিচার চাই’। আসলে পাহাড়ের আবহাওয়ার মতোই ক্ষণে ক্ষণে বদলায় পাহাড়ের রাজনীতির সমীকরণ। সেক্ষেত্রে পাহাড়ের রাজনীতির অন্য বাঁকে কী আছে তার জন্য অপেক্ষা ২রা মে পর্যন্ত।