সুস্থ পৃথিবীতে ফিরতেই হবেঃ
সত্যি কথা বলতে, এমন একটা পরিস্থিতি যে কিছুই ভালো লাগছে না, এই বন্দিদশা কার ভালো লাগে বলো! দু’চার দিনের ব্যাপার তো নয়, এতটা লম্বা সময়, কিন্তু এছাড়া তো কোনও উপায়ও নেই! এই গৃহবন্দী থাকাটাই একমাত্র উপায় যাতে করে আমরা সবাই আবার একটা সুস্থ পৃথিবীতে ফিরতে পারি। তাই যতই কষ্ট হোক, একঘেয়ে লাগুক, দমবন্ধ লাগুক, দয়া খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাবেন না।
আমি এখন হেড কুকঃ
বাড়ির কাজ করার অভ্যেস আমার আছে। মা চলে যাওয়ার পর থেকে বাড়ির অনেক কাজই আমায় করতেই হয়। শ্যুটিং না থাকলে বা সময় পেলে রান্না করা এবং অন্যান্য টুকটাক কাজ করেই থাকি। এখন বাড়ির রান্নার মূল দায়িত্বটা আমার ওপরে পড়েছে। এছাড়া বাড়ির যাবতীয় কাজ তা নিজেরাই ভাগ করে করছি। এমনিতে বাড়িতে থাকার সুযোগ হয় না, তাই এখন চুটিয়ে রান্না করছি। প্রচুর এক্সপেরিমেন্টও চলছে। এই ভাবেই দিন কাটছে আপাতত।
মায়ের কথা বড্ড মনে পড়ছেঃ
বিশেষ করে এই সময়টায় মাকে খুব মিস করছি। ২৪ ঘন্টা বাড়িতে রয়েছি, সব ব্যস্ততা এখন স্তব্ধ! গোটা বাড়ি জুড়ে মায়ের স্মৃতি...সর্বত্র মায়ের ছোঁয়া... ভীষণ মনে পড়ছে। এই তো সেদিনের কথা, মা তখন ছিলেন, বাড়ি ফিরেই মা কে ডাকতাম, মা হয়ত তখন কোনও কাজ করছেন, বললেন সেটা সেরে আসছেন। এটা শুনলেই আমি বলতাম, কী যে সারাদিন এত কাজ কাজ করতে থাকো কে জানে! তোমার কী কাজের শেষ নেই...? সত্যিই বোধহয় মায়েদের কাজ কখনও শেষ হয় না। আজ সেটা বেশ বুঝতে পারছি। বাড়ির কাজ মানে যে এত কাজ এটা আগে কখনও বুঝতেই পারিনি। আমরা ভাবি পেশাগত কাজ গুলিই প্রধান কাজ, কিন্তু এখন এই সংসারের সব কাজ করতে গিয়ে উপলব্ধি করলাম, ১২ মাস, প্রত্যেকটা দিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা কেবল মায়েরাই করেন।
মিস করছি নকশি কাঁথার ফ্লোরঃ
লকডাউনের আগে পর্যন্ত নকশি কাঁথার শ্যুটিং চলছিল। শ্যুটিং থাকলে সেই মতই সারাদিনের শেডিউল করা থাকে। আর এখন তো সারা দিন রাত অবসর যাপন। আমি এমনিতে একটু লেট রাইজার। আজকাল ওই ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়িতে প্রচুর কাজ থাকছে সেই সব কাজ করছি , তার সঙ্গে রান্না করা তো রয়েছেই। এছাড়া সিনেমা দেখা, বই পড়া, গান শোনা, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছেনা তাই ফোনে আড্ডা দিচ্ছি। বাইরে যাওয়াটা মিস করছি। কিন্তু ওই যে, সবসময় মাথায় রাখতে হবে, করোনার গ্রাস থেকে মুক্তি পেতে হলে বাড়িতে বন্দী থাকাটাই একমাত্র উপায়। সবাইকে একটাই অনুরোধ, বাড়িতে থাকুন। সচেনতনতা বজায় রাখুন।