২১ বছর আগে আজকের দিনেই বাঙালি হারিয়েছে তাঁর ‘নায়ক’কে। বাঙালি সেই ‘হারানো সুর’-এর যন্ত্রণা আজও ভোলেনি। তাই তো, ২৪ জুলাই দিনটা নিয়ে আসে একরাশ মন খারাপ। কেউ হয়তো উত্তম কুমারের সঙ্গে কাজ করতে না পারার কথা ভাবোন, কেউ বা তাঁর প্রিয় অভিনেতার অসময়ে চলে যাওয়ার কষ্ট ভুলতে পুরনো ডিভিডি বের করে ছবি দেখতে বসে যান।
সামাজিক মাধ্যমে ‘উত্তম কুমারের কোট’ নিয়ে শনিবার একটি পোস্ট করেছেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। যা ভাইরাল হয়েছে নিমেষে। বহু বছর আগে ধারাবাহিক ‘জন্মভূমি’তে কাজের সময়কার একটি অভিজ্ঞতা নেট-মাধ্যমে শেয়ার করে নিয়েছেন তিনি। ভাস্বরের কথায়, ‘‘যখন জন্মভূমি তে কাজ করতাম তখন হামেশা আমায় Coat পরতে হত। একদিন এই কালো Coat পরে শট দিয়ে এসে মেকআপ রুমে বসেছি। ড্রেসার নিমাই কাকা এসে বললেন, ‘জানো তুমি আজ কার Coat পরে শ্যুটিং করেছ?’ আমি ‘না’ বলাতে বললেন, ‘এটা বড়বাবুর জিনিস ,তোমায় পরালাম'। আমি বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলাম ‘বড়বাবু কে’? মুচকি হেসে কাকা জানালেন- ‘উত্তমকুমার’!’’
ভাস্বর জানিয়েছে এরপর শুনেই যেন তাঁর সারা শরীর ঘাম দিতে লাগল। তাঁর কাছে সেটা ছিল বড় এক পাওয়া। অভিনেতা আরও লিখেছেন, ‘অনেকবার বলেছিলাম আমায় দিয়ে দাও নিয়ে যাই, সে আর হয়নি। গুরু আমাদের সঙ্গেই আছেন এবং থাকবেন, যতদিন সিনেমা থাকবে।’ ভাস্বর জানিয়েছেন আজকের দিনটা তিনি বাধাধরা ভাবে ‘নায়ক’ দেখেন। এবারেও তাঁর অন্যথা হবে না।
৩ সেপ্টেম্বর, ১৯২৬ সালে জন্মছিলেন উত্তম কুমার। একদম প্রথমে সংসারের তাড়নায় কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টে কেরানির চাকরি করতেন। তখন থেকেই আহিরীটোলায় থিয়েটার গ্রুপ ‘সুহৃদ সমাজ’-এ নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন তিনি। সেখান থেকেই স্টুডিও পাড়ায় পরিচিতি। ১৯৪৮-এর ছবি ‘দৃষ্টিদান’ দিয়ে আত্মপ্রকাশ, যা একদম চলেনি। ডেবিউ করার চার বছরের মাথায় ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে অভিনয় করেন। তারপর আর কখনও ফিরে তাকাতে হয়নি। কর্মজীবনে ২১২টির বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। যা এক-একটা মাইলস্টোন হয়ে রয়েছএ বাঙালি দর্শক ও চলচ্চিত্র-প্রেমীদের কাছে।