বয়স শুধুই একটা সংখ্যা মাত্র তা ফের প্রমাণ করে দিলেন চৈতালি দাশগুপ্ত। দূরদর্শনের রঙিন ইতিহাসের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে চৈতালি দাশগুপ্তের নাম। দূরদর্শনের সংবাদ পাঠিকা হিসাবে বাঙালির মনের মণিকোঠায় চিররঙিন তিনি। এদিন ৭০-এ পা দিলেন চৈতালি দাশগুপ্ত।
টলিপাড়ায় চৈতালি দেবীর আরও একটা পরিচয় রয়েছে পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত ও রিভু দাশগুপ্তের মা তিনি। মায়ের জন্মদিনের অন্দরের ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন ‘শুধু তোমারই জন্য’ পরিচালক। সত্তরে পা দেওয়া চৈতালি যেন ১৭-র তরুণী! এদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ঘরেতে ভ্রমর এল গুনগুনিয়ে’ গানে নাচতে দেখা গেল বার্থ ডে গার্লকে। সেই গান গাইলেন চৈতালির বউমা বিদিপ্তা চক্রবর্তী, নাতনি মেঘলা দাশগুপ্ত -সহ অন্য বন্ধুরা।
পরনে খয়েরি রঙের সিল্কের শাড়ি, লাল ফুল স্লিভস ব্লাউজ। কপালে সুবিশাল কালো টিপ, গলায় হার। চুলে সাদা রঙের ফুল গুঁজে নাচলেন চৈতালি। বন্ধুর নাচ দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারেননি শাশ্বতী গুহঠাকুরতা। তিনিও নাচের তালে পা মেলালেন। এই যুগলবন্দি দেখে নস্টালজিক বাঙালি মন। দূরদর্শনের পুরোনো স্মৃতি হাতাড়ালো সকলে।
নাচ-গান-গল্প-আড্ডায় জমে উঠেছিল এদিনের আসর। শেষ দুই নাতনিকে পাশে নিয়ে কেক কাটলে চৈতালি। পায়েসে হল মিষ্টিমুখ। শহরের এক হোটেলে বসেছিল এই সেলিব্রেশনের আসর। ইদা আর মেঘলাকে ঘিরেই চৈতালির গোটা জগত। দিদি নম্বর ১-এর মঞ্চে এসে ফাঁস করেছিলেন সেই গল্প।
রচনার মঞ্চে বৌমার কীর্তি ফাঁস করেছিলেন চৈতালী দাশগুপ্ত। তিনি বলেছিলেন, ‘বন্ধু কখন বউমা হয়ে গেল, সেটা একদম চমকপ্রদ গল্প…’। পাশ থেকে হাসিমুখে বিদিপ্তা যোগ করেন, ‘হ্যাঁ, বন্ধু কখন ছেলের বউ গেল… সেটা শকিং’। আধুনিক চিন্তা-ভাবনায় বিশ্বাসী চৈতালী, তিনি জানান, ‘বিয়ের পর ও আমার মেয়ে হয়ে গেল। সঙ্গে একটা ফুটফুটে বাচ্চা (মেঘলা) পেয়েছিলাম। আমার বাড়িটা ভরে গেল। আমার বাড়িতে মেয়ে ছিল না। আমার দুই ছেলে। আর আজ বাড়িময় মেয়ে।….. সব মিলিয়ে আমার ভরপুর সংসার’।
রাজা দাশগুপ্তের সঙ্গে পাঁচ দশক পুরোনো দাম্পত্য চৈতালির। চৈতালির জন্মদিনেও একফ্রেমে ঝলমলে দম্পতি। ১৯৭৯ সালে বিয়ে করেন দুজনে। পঞ্চাশ বছর কী বদলে গিয়েছে? প্রশ্নের জবাবে রাজা দাশগুপ্ত বলেছিলেন, ‘৫০ বছরে ওর চেহারা বদলে গিয়েছ। ও দাবি করে আমি আজকাল একটু বেশি মেজাজ দেখাচ্ছি। আর ওর মেজাজ তো যেমন ছিল তেমনই আছে, বরাবর তিরিক্ষি মেজাজ'।