যৌথ পরিবারে বড় হয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বিয়ের ২৭ বছর পরেও মা-বাবার সঙ্গেই সংসার সৌরভ-ডোনার। দাদাগিরির মঞ্চেও হামেশাই মিলেমিশে থাকার বার্তা দেন দাদা। আবারও একবার সেই বার্তা নিয়ে হাজির মহারাজ। সম্প্রতি দাদাগিরির মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন ৭৬ বছরের ক্যানসার জয়ী প্রতিমা পাল। তাঁর স্পিরিট দেখে মুগ্ধ সৌরভ। আরও পড়ুন-চার সন্তানের মা, তবুও একা বাঁচার লড়াই ৭৬ বছরের প্রৌঢ়ার; কেন আঁতকে উঠলেন সৌরভ?
এই বয়সেও একা বেঁচে থাকার লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। শুধু ক্যানসার নয়, জীবনে প্রচুর লড়াই করেছেন প্রতিমা পাল। তাঁর শরীরে রয়েছে ৭টি প্লেট। একটা সময় শরীরের ৩০% পুড়ে গিয়েছিল, দু-মাস হাসপাতালে উপুড় হয়ে শুয়ে থেকেছেন, চলেছে চিকিৎসা। কিন্তু হার মানেননি লড়াকু প্রৌঢ়া।
কর্মসূত্রে ছেলে-বৌমারা থাকেন মার্কিন মুলুকে। তাঁদের সঙ্গে কেন থাকেন না তিনি? অবাক করা জবাব দিয়েছেন ক্যানসার জয়ী। বললেন, 'আমি নিজেদের মনে করি বেনারসি শাড়ি। বেশি ব্যবহার করলে রঙ চটে যাবে’। তিনি বলেন কিছুদিন আগেই আড়াই মাস আমেরিকায় ছেলে-বৌমার সঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়ে এসেছেন। ছেলে আরও কয়েকমাস কাটিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিল, কিন্তু তিনি শোনেননি।
ছেলেদের সংসারে থাকার অসুবিধা নিজেই শেয়ার করলেন তিনি। জানালেন, দুই প্রজন্মের মধ্যে ফারাক অনেক। সেই কারণেই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত। প্রতিমা দেবী বলেন, ‘আমি যদি সংসারের দড়িটা টানি তাহলে অন্য পক্ষে যে আছে, টানাটানিতে ছিঁড়ে যাবে। সম্পর্কটা থাকবে না। তাই আমি দড়িটা লুজ করেই বসে থাকি। ছেলের সংসার গিয়ে বেশি জড়িয়ে পড়লে আমার ছেলেটা স্যান্ডউইচ হয়ে যাবে’।
শাশুড়ি-বৌমার এই জেনারেশন গ্যাপ নিয়ে দাদাগিরির মঞ্চেই অপর প্রতিযোগির সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন প্রতিমা দেবী। পরিস্থিতি সামাল দেন সৌরভ। বৌমাদের উপদেশ দেন দাদা। বলেন, ‘কোলাবরেশন কথাবার্তা চলবে না। ওইসব বইতে-খাতায় ঠিক আছে। শাশুড়ি নিজের মায়ের মতো, তাঁকে ভালোবাসতে হবে, যত্ন করতে হবে। আর সেটা অন্তর থেকে আসতে হবে’।
জীবনে বারাবার দুর্ঘটনার শিকার লড়াকু প্রতিমা পাল। অবাক সৌরভ বলেন, ‘এত ঘটনা ঘটান কী করে! বক্সিং-টক্সিং করেন নাকি?’ তবে তিনি ক্যানসার মুক্ত একথা জেনে খুশি নন মহারাজ। একইসঙ্গে আবদার করেন, ‘বৌমাদের সঙ্গে ঝগড়া নয়’। জবাবে প্রতিমা দেবীর সাফ কথা, 'আমি বৌমাদের সঙ্গে ঝগড়া করি না। আমি খুব ভালো শাশুড়ি'।