জমে উঠেছে দাদাগিরি সিজন ১০-এর লড়াই। এর মাঝেই চর্চায় গত সিজনের বিজয়ী! শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে দাদাগিরি সিজন ৯-এর ট্রফি জিতে নিয়েছিলেন বীরভূমের প্রত্য়ন্ত গ্রামের যুবক মঈনুদ্দিন। দাদাগিরি জিতে ভাগ্য ফিরেছিল তাঁর। মাটির বাড়িতে বড় হওয়া মঈন জিতেছিলেন ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, সঙ্গ চার চাকা গাড়ি ও নগদ পুরস্কার। কিন্তু ভাগ্যের এমনই পরিহাস যে দেড় বছর পার হলেও এখনও দাদাগিরি-র মঞ্চে জেতা সেই ফ্ল্যাট হাতে পাননি মঈনুদ্দিন।
দাদাগিরি সিজন ৯-এর চ্যাম্পিয়ান অফ দ্য চ্যাম্পিয়ান্সের মেধা মুগ্ধ করেছিল গোটা বাংলাকে। চোখের দৃষ্টি না থাকা তার প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠতে পারেনি মঈনুদ্দিনের ট্রফি জয়ে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সামনে ক্যাপ্টেন রাসগার্ডের পক্ষ থেকে ফ্ল্যাটের প্রতীকী চাবি গ্র্যান্ড ফিনালের মঞ্চে তুল দেওয়া হয়েছিল। সেটি অনুষ্ঠিত হয় ২০২২ সালের মে মাসে। তারপর থেকে পেরিয়েছে ১৮ মাস। কিন্তু এখনও ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যের সেই ফ্ল্যাটের দর্শন পাননি বিজেতা, বাংলা পক্ষের কাছে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
দিন কয়েক আগে বাংলা পক্ষের গর্গ চট্টোপাধ্যায় মঈনুদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে এই তিক্ত সত্যিটা সামনে আনেন। বিজয়ী মঈনুদ্দিনের অভিযোগ, ফ্ল্যাটের ব্য়াপারে ওরা (ক্যাপ্টেন টিএমটি রাসগার্ড) কোনও যোগাযোগ করেনি। আমি নিজে যোগাযোগ করি। জানুয়ারি (২০২৩) মাস থেকে ফের যোগাযোগ শুরু হল।' অভিযোগ তাঁকে ফ্ল্যাটের বদলে ১৫ লক্ষ টাকা নগদ টাকা দিতে চায় ক্যাপ্টেন টিএমটি। তবে ফ্ল্যাটের দাবিতে অনড় থাকেন মঈনুদ্দিন। এরপর ২০২৩-এর জুন মাসে মঈনুদ্দিনের কাছে জানত চাওয়া হয় কোন জেলায় ফ্ল্যাট নিতে আগ্রহী তিনি। জবাবে মঈনুদ্দিন জানায়, কলকাতা অথবা দূর্গাপুরে ফ্ল্যাট নিতে চান তিনি।
এরপর বৃহত্তর কলকাতার অন্দরে (কেষ্টপুর, উত্তর চব্বিশ পরগণা) একটি ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা জানায় সংস্থা। পরে জানানো হয়, ট্যাক্স কাটার পর যে বাড়তি টাকা লাগবে সেটি মঈনুদ্দিনকে দিতে হবে। ৬% রেজিস্ট্রি চার্জ লাগবে বলে জানানো হয়েছে বীরভূম জেলার এই প্রতিনিধিকে। কত স্কোয়ার ফিটের ফ্ল্য়াটে সে সম্পর্কেও কোনও স্পষ্ট জবাব পাননি বিজেতা। বরং শুনেছেন- ‘ফ্ল্যাট দেব বলেছিলাম, কবে দেব তা তো বলিনি’।
প্রতিশ্রুতির খেলাপি হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাংলা পক্ষ। এই ব্যাপারে হিন্দুস্তান টাইমসের তরফে গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা দাদাগিরি কর্তৃপক্ষের বিষয় নয় বা জি বাংলার বিষয় নয়। দাদাগিরির টিম তো নিজেদের পকেট থেকে টাকা দেবে না। ক্যাপ্টেন টিএমটি-র সঙ্গে দাদাগিরি-র চুক্তি ছিল। এতদিন দেরি কেন হচ্ছে সেটাই তো লজ্জার।’ গর্ব চট্টোপাধ্যায়ের ওই লাইভের পর বারংবার ক্যাপ্টেন টিএমটি-র তরফে মঈনুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান বাংলাপক্ষের প্রধান। তাঁর সাফ কথা, ‘দ্রুত এই বিষয়টির সুরাহা না হলে বৃহত্তরভাবে বিষয়টিকে এক্সপোজ করবে বাংলা পক্ষ’।