দৃষ্টিকোণ দিয়ে শুরু তারপর হিন্দি-বাংলা মিলিয়ে বহু ছবি করেছেন তিনি মাত্র কবছরেই। নজর কেড়েছেন অভিনয়ের দক্ষতা দিয়ে। এবার তিনি শীঘ্রই স্ক্রিন ভাগ করতে চলেছেন অক্ষয় কুমারের সঙ্গে, তার আগে তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার। ভাবছেন কার কথা বলছি? সোহম মজুমদার।
অক্ষয় কুমারের সঙ্গে কোন ছবিতে দেখা যাবে আপনাকে?
সোহম: ছবিটির নাম স্কাইফোর্স। বায়ুসেনার উপর নির্মিত একটি পিরিয়ডিক ছবি এটি, ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যকার সময়কে তুলে ধরা হয়েছে এখানে। আগামী বছরের দীপাবলির সময় মুক্তি পেতে পারে এই ছবিটি।
বলিউডের অন্যতম লিডিং হিরোর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
সোহম: দুর্দান্ত। ছোট থেকেই ওঁর ভক্ত ছিলাম। অক্ষয় কুমারের কোনও মজার ছবি যেমন ভুলভুলাইয়া, ওয়েলকাম, ইত্যাদি বেরোলেই বন্ধুরা মিলে দেখতে যেতাম। সেখান থেকে ওঁকে চোখের সামনে কাজ করতে দেখতে পাওয়া, একটা আলাদাই অভিজ্ঞতা। ভীষণ ডিসিপ্লিন্ড। আসেন কাজ করেন, চলে যান।
প্রথম হিন্দি ছবি শাহিদ কাপুরের সঙ্গে। আজ ফিরে তাকালে তাঁর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা নিয়ে কী মনে হয়?
সোহম: ওঁরা সবাই একে অন্যের থেকে ভীষণ আলাদা। সবারই একটা বিশেষত্ব আছে যেটা দেখে বোঝা যায় কেন আর কীভাবে ওঁরা আজ যেখানে আছেন সেখানে পৌঁছেছেন। তবে, শাহিদ আমার দেখা অন্যতম ডেডিকেটেড অভিনেতা। কিন্তু কী বলুন তো, অনেক সময় এমনটা হয় যে অভিনেতারা এমন একটা গল্প বাছলেন যেটা দর্শকদের পছন্দ হল না, কিন্তু তার মানে এটা নয় যে তাঁরা সেই কাজটা মন দিয়ে করেননি। সেই কাজটাও তাঁরা ১০০ শতাংশ ডেডিকেশন দিয়েই করেন।
আরও পড়ুন: এবার চোরের ভূমিকায় ধরা দিচ্ছেন শাহরুখ? ডাঙ্কির সাফল্যের মাঝেই ধুম ৪ নিয়ে চর্চা তুঙ্গে
আরও পড়ুন: জ্যাকলিনকে মেসেজ করেননি সুকেশ! উল্টে সিবিআই তদন্তের দাবি তুললেন অভিযুক্ত
বাংলা ছবিতে আবার কবে দেখা যাবে আপনাকে?
সোহম: এই বছর বাংলায় কাজ করিনি। দুটো হিন্দি প্রজেক্টে কাজ করলাম, আর জানেনই তো হিন্দি ছবির কাজ অনেকটা সময় ধরে করা হয়। একটা ছবিতে সাত মাস লাগল, অক্ষয় কুমারের সঙ্গে যে ছবিটা করছি সেটার কাজ তো এখনও চলছে। তবে আগে একটা বাংলা ছবি করা ছিল সেটা হয়তো ২০২৪-এ মুক্তি পেতে পারে। এটা একটা এক্সপেরিমেন্টাল ছবি, ওয়ান শট ফিল্ম এটা। বলিউডে মেনস্ট্রিম কাজ করি বলে এখানে এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করতে ভালো লাগে। কারণ জানি এখানে আমায় কেউ জাজ করবে না।
বলিউড-টলিউড, দুটো জায়গাতেই কাজ করার সুবাদে কোনটাকে একটি এগিয়ে রাখবেন? দুটোর মধ্যে ফারাক কতটা?
সোহম: এটা না ইন্ডাস্ট্রির বিষয় নয় জানেন। এটা মানুষের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। প্রোডাকশনের লোকজন যত্ন নিচ্ছে কিনা, কীভাবে কাজ চলছে সেটার উপর নির্ভর করে। এই ধরুন না যে এক্সপেরিমেন্টাল ছবিটার কথা বলছিলাম সেটার থেকে আমি প্রায় কোনও পারিশ্রমিক নিইনি। শট রেডি হতো যখন রাস্তায় ফুটপাতে বসে থাকতাম আমরা। কারণ একটাই ভ্যানিটি থাকত যেখানে সব জিনিসপত্র রাখা থাকত। কিন্তু কখনও মনে হয়নি যে অবহেলা বা খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। খুব উৎসাহ নিয়ে সবাই মিলে কাজটা করেছি।
অভিনয় জগতে আসা কীভাবে?
সোহম: ছোট থেকেই বাড়িতে হিন্দি সিনেমা, গানের প্রচলন ছিল। বাড়িতে কেউ এলেই আমায় নেচে বা অভিনয় করে দেখাতে বলত, আমিও আনন্দের সঙ্গে সেগুলো করে দেখাতাম। কখনও বিরক্ত হতাম না। পরে স্কুলে থাকাকালীন থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হই। কলেজে উঠে নিজেদের একটা গ্রুপ বানাই, ম্যাড অ্যাবাউট ড্রামা। এরপর একটা শোতে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় আমায় দেখেন, সেখান থেকেই দৃষ্টিকোণের জন্য ডাকেন। ওই শুরু। তারপর একটা হিন্দি মিউজিক ভিডিয়োতে কাজ করি সেখান থেকে আবার কবীর সিংয়ের জন্য ডাক পাই। তারপর থেকে আর থেমে থাকিনি, একটার পর একটা কাজ করে চলেছি।
কোন ধরনের কাজ করতে বেশি ভালো লাগে? রমকম, থ্রিলার নাকি অ্যাকশন?
সোহম: আমি গল্পটা দেখি। এখনও আমি সেই পজিশনে যাইনি যে জ্যঁর বা স্ক্রিপ্ট দেখে কাজ বাছব। সেটা হলে হয়তো অনেক ছবিই করতাম না। তবে এটা ঠিক আমি অনেক ভালো ভালো ছবির অংশ থাকতে পেরেছি। ভালো ভালো কাজ করেছি। আবার অনেক সময় ভুল ছবিও বেছেছি।
বছর শেষটা খোশমেজাজে আড্ডা দিলেও জানুয়ারি থেকে ফের স্কাইফোর্সের কাজ শুরু করবেন সোহম। প্রসঙ্গত অক্ষয় কুমার নিজেও এই ছবির বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেছেন।