একটা সময় তাঁর গুণমুগ্ধদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ‘রাজনীতিতে নেমে গানের কেরিয়ারটা শেষ করে দিল বাবুল’। সেইসব কোনওদিন পাত্তা দেন না গায়ক। একটা সময় বলিউডে দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন এই বাঙালি শিল্পী। এখন অনেকখানি গুটিয়ে নিয়েছেন নিজেকে। পুজোর ঠিক আগেই মুক্তি পেল বাবুল সুপ্রিয়র নতুন আধুনিক গান। সেই গান নিয়ে কথা বলতে গিয়েই বলিউডর অরিজিৎ জামানা নিয়ে বড়সড় মন্তব্য গায়কের।
আজকাল প্লে-ব্যাকের জগতে খুব বেশি পাওয়া যায় না বিধায়ক বাবুলকে, এই প্রশ্ন করতেই গায়কের সটান জবাব-'বহুদিন পর মোটেই গানের জগতে নয়। আমার অনেক গান বেরিয়েছে মাঝখানে। সৃজিত-শিবু সবার ছবিতে হিট গান গেয়েছি। হামির গান গেয়েছি, সৃজিতের গুমনামী বাবাতে গান করেছি। হিন্দিতে শ্রেয়ার সঙ্গে বনশালির ছবিতে গেয়েছি। এখন অরিজিৎ সিং-এর যুগ চলছে, তাই বলে তো আমার গলা খারাপ হয়ে যায়নি।' খানিক বিরক্তির সুরেই সংযোজন, ‘কোথায় কতটা গলা বাঁচিয়ে গাইতে হয়, সেটা আমার জানা আছে। এটা অভিজ্ঞতা থেকে শেখা। গানটা যেখানে ছিল সেখানেই আছে, বরং এখন আরও ভালো হয়েছে।’
বলিউডে শান, সোনু, বাবুলদের গানের সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য নাকি অরিজিৎ সিং-ই কারণ, মনে করেন বাবুল। আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অরিজিৎ সিংহ আসার পর এখন বলিউডে আমাদের মতো একাধিক শিল্পীরই তো গানের সংখ্যা কমেছে। এখন আমি সঙ্গীত পরিচালক হলে পাঁচটা গান তৈরি করলে হয়তো তিনটে গানই অরিজিৎকে দিয়ে গাওয়াব। তার মানে কিন্তু এটা নয় যে, অরিজিৎ দারুণ গাইছে আর আমরা সবাই খারাপ গায়ক!’ তবে অভিযোগে বিশ্বাসী নন তৃণমূল নেতা।
‘না না ভুলিনি’ গানটিতে সোমলতা আচার্যর সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন বাবুল। গানের কথাও তাঁরই লেখা। সুর দিয়েছেন সপ্তক সানাই। গানের ভিডিয়োয় দেখা মিলেছে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় ও লহমা ভট্টাচার্যর। এখনও রাত ১১টা বাজলেই নিয়ম করে রেওয়াজ করতে বসেন বাবুল সুপ্রিয়। সেই নিয়মে ভাটা পড়ে না শত রাজনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যেও।
মমতা দিদি তাঁকে গান করার পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন জানান তৃণমূলের বিধায়ক। বাবুল স্পষ্ট বলেন, ‘দিদি আমাকে বলেছেন মন দিয়ে কাজ করো, মন দিয়ে গান করো। উনি আমাকে অন্যরকম স্বাধীনতা দিয়েছেন, দিল্লিতে সেটা আমি পারতাম না। আমি নিজে যা ভালোবাসি তার বাইরে কিছু করি না… খুব একটা পলিটিক্স আমি পারিও না'।
এখন গিটার শিখছেন বাবুল। দলের তরফে দেওয়া দায়িত্ব পালনের বাইরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন গায়ক। জানালেন, কাজের বাইরে রান্নাবান্না করে, গার্ডেনিং করে আর রেওয়াজ করেই দিন কাটে তাঁর। গান বাবুলের বাঁচার অক্সিজেন। সেটা ছেড়ে এক মুহূর্তও থাকতে চান না তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমি বদলাইনি। শুধু বাবুল সুপ্রিয়র আরও একটা উন্নত সংস্করণে পরিবর্তিত হয়েছি— বাবুল সুপ্রিয়-২।’