আর কিছুদিন পরই মুক্তি পেতে চলেছে রক্তকরবী। এই ওয়েব সিরিজটি জি ফাইভে মুক্তি পাবে। মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে বিক্রম চট্টোপাধ্যায় এবং রাইমা সেনকে। সঙ্গে থাকবেন লাবণী সরকারও। তাঁর এই আসন্ন প্রজেক্ট সম্পর্কে আনন্দবাজারকে নানা বিষয়ে উত্তর দিলেন। জানালেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে দেখতে দেখতে তাঁর ৩৭ বছর কেটে গেল। অভিনেত্রীর কথায়, '২১ বছর থেকে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেছি। অনেকগুলো বছর কেটে গেল। চাকরি করলে এতদিনে অবসর নিয়ে নিতাম। কীভাবে যে অভিনয়কে ভালোবেসে ফেললাম!'
কিন্তু এই ভালোবাসাটা এল কীভাবে? এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, 'ছোট থেকেই নাচ ভালোবাসি আমি। ভরতনাট্যম শিখতাম আমি। যাদবপুরে পড়াকালীন সমস্ত অনুষ্ঠানে অংশ নিতাম। সেখানে আমায় প্রথম দেখেন দেবাংশু সেনগুপ্ত। তিনি এসে বলেন জোছন দস্তিদার তাঁর সিরিয়ালের জন্য নায়িকা খুঁজছে। আমি যেতেই চাইনি। আমার আগ্রহ ছিল না। তবুও জোর করে আমায় নিয়ে যাওয়া হয়। গিয়ে দেখি সব্যসাচী চক্রবর্তী দাঁড়িয়ে। ওটাই আমার জীবনের প্রথম ধাপ। এরপর অপর্ণা সেন তাঁর সতী ছবির জন্য আমায় বেছে নেন।'
কিন্তু এত বছর কীভাবে থেকে গেলেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে? এই বিষয়ে অভিনেত্রী জানান, 'গোটা জীবন ধৈর্য ধরে থাকাটাই নিয়ম। জীবনে অনেক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছেড়ে গিয়েছে। কিন্তু অভিনয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়নি। কারণ সে আমায় ছেড়ে যায়নি।'
কিন্তু প্রথম কাজেই সব্যসাচী চক্রবর্তী, প্রথম পরিচালক অপর্ণা সেন, এমন সুযোগ কজন পান! 'আমি সেভাবে কিছুই অনুভব করতে পারিনি। আমার বয়স তখন অনেক কম। ফলে গভীরতা বুঝিনি। আর বুঝিনি বলেই কোনও চাপ হয়নি।'
সিনেমা সিরিয়ালের পর এবার ওয়েব সিরিজে আসছেন তিনি। এই নতুন শুরু নিয়ে তাঁর বক্তব্য কী? এই বিষয়ে অভিনেত্রী বলেন, ' সিরিয়াল করার ইচ্ছে নেই। সিনেমা ভালো তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এটা এখন সিরিজের যুগ। সত্যি বলতে মানুষের সমস্যা, ঘৃণা, ভালোবাসা সবই সিরিজে ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। এই কারণেই দর্শকরা এই সিরিজের প্রতি এখন এত আকৃষ্ট হচ্ছেন। এই সিরিজের হাত ধরেই সব বদ্ধমূল ধারণা ভেঙে যাচ্ছে। এখানে এখন আর অমন ভাবনা নেই যে হিরোকে এমন দেখতে হবে, নায়িকাকে সুন্দরী হতে হবে, ইত্যাদি। আমার চোখের নিচটা ফোলা। এখানে আমায় সেটা মেকআপ দিয়ে ঢাকতে হয় না। আমি যেমন তেমন থাকতে পারি। একজন কত নতুন মুখ দেখা যায়।'
কখনও লুকের জন্য হাতছাড়া হয়েছে তাঁর? এই বিষয়ে অভিনেত্রী বলেন, ' আমার মধ্যে কখনই নায়িকা হওয়ার উপাদান ছিল না। আমি মাটির কাছে থাকতে ভালোবাসি। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মনে হতো কীভাবে হিরোইন হবো? ঠিক করেছিলাম যেমন কাজের সুযোগ আসবে তেমনই করব। ২৯ বছর বয়সে ৩৯ বছরের একটি লোকের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার থেকে কয়েক বছরের বড় প্রসেনজিৎ, তাঁর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। আমার এসব নিয়ে কিছু মনে হয়নি।'