এই বছর কেকের জন্মদিনটা এভাবে কাটবে তা দুঃস্বপ্নেও আশা করেননি লেসলি লুইস। কৃষ্ণকুমার কুনাথ ওরফে কেকে-র সঙ্গীতজীবনের একদম গোড়ার দিকের সঙ্গী সুরসকার লেসলি লুইস। একসঙ্গে মিলে এই জুটি তৈরি করেছিলেন ‘ইয়ারো দোস্তি’। তারপর কেটে গিয়েছে দু-দশকেরও বেশি সময়। আসুমদ্রহিমাচলের কাছে আজও বন্ধুত্বের অ্যানথম এই গান। বন্ধুত্বের সংজ্ঞা কী? তা বুঝিয়ে দেয় এই গান। আর সেই গানেই কেকে-র প্রথম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করলেন লেসলি লুইস। ‘রকফোর্ড’ (১৯৯৯) ছবির জন্য এই গান রেকর্ড করেছিলেন দুজনে, কত স্মৃতি…কত হাসিকান্না জুড়ে রয়েছে এই গানে।
২৩শে অগস্ট ছিল কেকে-র জন্মবার্ষিকী। বেঁচে থাকলে এদিন ৫৪য় পা দিতেন তারকা। তবে ৩১শে মে অভিশপ্ত রাত কেড়ে নিল সবকিছু। কলকাতায় এক গানের অনুষ্ঠান শেষ করার কয়েক মিনিটের মধ্যে থেমে গেল কৃষ্ণকুমার কুনাথ সুর-সফর। তবে কেকে-র মতো শিল্পীর কি মৃত্যু হয়? তিনি বেঁচে রয়েছেন তাঁর সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে, তাঁর শিল্পের মধ্যে দিয়ে। সেই প্রমাণই পাওয়া গেল ‘কেকে ফরএভার কনসার্ট’-এ। কেকে-র জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে তাঁর গানের মধ্যে দিয়েই শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাল পরিবার এবং ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা।
এদিন গিটার হাতে ‘ইয়ারো দোস্তি’ গাইলেন লেসলি লুইস। সেই ভিডিয়োর সঙ্গে তাঁর বার্তা- ‘আজ তোকে একটু বেশি মিস করছি। তুই না থেকেও আছিস, তোর উত্তরাধিকার রয়ে যাবে আর সেটা জ্বলজ্বল করবে, ঠিক যেমনটা এখন করছে’।
এই কনসার্টে বাবার উদ্দেশে গান গাইল কেকে-র ছেলে নকুল কুন্নথ ও মেয়ে তামারা। কেকে দুই সন্তানই বাবার পদচিহ্ন ধরেই হাঁটছেন, সঙ্গীতই ধ্যানজ্ঞান নকুল ও তামারার। এদিন কেকে-র খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু শান, পাপনের মতো গায়করাও অংশ হন এই কনসার্টের।
নকুলের কথায়, ‘বাবার ব্যান্ডের সঙ্গে মঞ্চে পারফর্ম করাটা একটা বিরল সম্মানের ব্যাপার। কিছু সেরা শিল্পীদের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নিলাম, একসঙ্গে বাবার গানে গলা মেলালাম। বিশেষ ধন্যবাদ, শানকে, যে এই জার্নিটায় সারাক্ষণ উৎসাহ জুগিয়েছেন। এই দিনটা স্মৃতিতে থাকবে। আজ যে সকলে এসে বাবাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য দিলেন তাঁদের মনে রাখব’।
হিন্দি, তামিল, তেলেগু, কানাড়া, বাংলা-সহ একাধিক ভাষায় গান রেকর্ড করেছিলেন কেকে। আখোঁ মে তেরি, খুদা জানে, তড়প তড়প কে, তু যো মিলা, তু হি মেরি শব হ্যায়-এর মতো একাধিক হিট গান শ্রোতাদের উপহার দিয়েছেন প্রয়াত গায়ক।
গত ৩১ মে কলকাতার নজরুল মঞ্চে শো করে ফেরার পথে অসুস্থবোধ করতে থাকেন কেকে। এরপর হোটেলে ফিরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সেইসময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। লাইভ শো করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কেকে-যে এভাবে চলে যেতে পারেন তা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি তাঁর ভক্তরা। ৩১ মে রাতে চোখের জল ফেলেছিল গোটা দেশ। সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতি আঁকড়েই বাকি জীবনটা কাটাবেন কেকে-র ভক্তরা।