'আপনিই শ্রেষ্ঠ, আপনিই পুলিশ।' না, এই কথা কোনও শ্রদ্ধার সঙ্গে লেখা নয়। এতে নেই কোনও কৃতজ্ঞতার ছোঁয়া। আছে স্রেফ ভয়। যেখানে বিপদে পড়লে সাধারণ মানুষ পুলিশের দ্বারস্থ হয় সেখানে তাঁরাই যদি ভয় দেখান, তখন! এমনই কিছু ঘটেছে অভিনেত্রী নবনীতা দাসের সঙ্গে। আর সেই বিষয়ে একাধিক ফেসবুক পোস্টও করেন তিনি। তবে একটি পোস্টে তিনি সোজাসুজি পুলিশ অফিসারের নাম নিয়ে অভিযোগ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
চরম হেনস্থার শিকার হওয়ার পর কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায়। লেখেন, 'খুব বড় শিক্ষা পেলাম আজ। সেলিব্রিটি বা চেনা মুখ এতে আমি বিশ্বাসী নই। সাধারণ মানুষ হিসেবেই সাহায্য চাইতে গেছিলাম। পরশুরাম বাবু দারুন ভয় পাওয়ালেন। আপনিই শ্রেষ্ঠ স্যার, আপনিই পুলিশ।' ফেসবুক পোস্টে এমনটাই লেখেন অভিনেত্রী।
নবনীতা বা জিতু কামাল একা নন। কিছুদিন আগে রশিদ খানের স্ত্রীও পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ করেছিলেন। তার কিছুদিনের মধ্যেও ফের এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
নবনীতা এবং জিতুর অভিযোগের ভিত্তিতে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করে নিমতা থানার পুলিশ। এই ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই নিয়ে। ধৃতদের বিরুদ্ধে গালিগালাজ, মারধর এবং গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে করা হয়। শুধু তাই নয়, জিতু এবং নবনীতা ফেসবুকে যে লাইভ করেছিলেন সেখানে দেখা যায় তাঁরা প্রকাশ্যে, পুলিশের সামনেই নবনীতাকে হুমকি দিচ্ছেন। নিমতা থানার সামনেই, যেখানে একাধিক পুলিশ কর্মী উপস্থিত ছিলেন তাঁদের সামনেই গোটা বিষয়টা ঘটে। প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় তাঁকে। ভয় পেয়ে যান অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, পুলিশের সামনেই হুমকি দিচ্ছে, বাইরে বেরোলে কী করবে!
গোটা বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে অভিনেত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করেছেন। অর্থাৎ তাঁকে জানিয়েছেন গোটা বিষয়টা। জিতু একা নন, নবনীতাও টলি পাড়ার বেশ পরিচিত মুখ। তাঁদের বক্তব্য পুলিশের সামনে তাঁদের সঙ্গে অসভ্যতা করলেও, প্রাণনাশের হুমকি দিলেও পুলিশ তাদের কিছুই বলে না, উল্টে সেখান থেকে চলে যেতে বলে বলেই অভিযোগ করেন অভিনেত্রী। এর আগেও রশিদ খানের স্ত্রী একই ভাবে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং হেনস্থার কথা জানিয়ে সরব হয়েছেন।
কিন্তু আসলে বিষয়টা ঠিক কী হয়েছিল? উত্তর চব্বিশ পরগনার নিমতার কাছে যে মাঝেরহাটি মোড় আছে সেখানে একটি পণ্যবাহী গাড়ি এই টলি জুটির গাড়িকে ধাক্কা মারে। এরপর যখন তাঁদের গাড়ির চালক ওই পণ্যবাহী গাড়িটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন তখনই অশান্তির সূত্রপাত ঘটে। প্রাণে মেরে হুমকি সহ একাধিক হুমকি দেয় তারা তাও পুলিশের সামনেই। এই বিষয়ে নবনীতা জিতু অভিযোগ জানাতে গেলে, এফআইআর করতে গেলে সেটা গ্রহণ করে না পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ করেন নবনীতা তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে।
দীর্ঘক্ষণ এই জুটিকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলেও বসিয়ে রাখা হয় তাঁদের। এমনটাই জানিয়েছেন অভিনেত্রী। অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছেন তাঁরা এই ঘটনার পর আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছেন, অর্থাৎ মোট ৪জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন যে তাঁরা ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি জানান যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিমতা থানার তরফে জানানো হয়েছে যে ওই পণ্যবাহী গাড়ির চালক নবনীতা এবং জিতু ও তাঁদের গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে গাড়ি ভাঙচুর, গালিগালাজ এবং মারধরের অভিযোগ করেছে। বর্তমানে গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।