সুশান্তের মৃত্যুর মামলার রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সিবিআই এই মামলায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে,অন্যদিকে এইদিনই সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। মৃত্যুর মাত্র কয়েকঘন্টা আগে, ১৩ই জুন নতুন ফিল্মের প্রোজেক্ট নিয়ে দীর্ঘসময় কনফারেন্স কলে বলিউড পরিচালক নিখিল আডবানি ও প্রযোজক রমেশ তোরানির সঙ্গে আলোচনা করেন সুশান্ত সিং রাজপুত। সেই ফোনটি করা হয়েছিল সুশান্তের এজেন্টে উদয় সিং গৌরী মারফত, টাইমস নাওয়ের প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। ১৩ই জুনের দুপুরে চলে এই ভার্চুয়াল মিটিং।
নতুন প্রোজেক্ট নিয়ে সুশান্তের সঙ্গে আলোচনার এই তথ্য মেনে নিয়েছেন প্রযোজক রমেশ তোরানি। তাঁকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ আমি কথা বলেছিলাম, তবে আমি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না’। এরপর তিনি সাংবাদিককে অনুরোধ করেন,'সিবিআইকে তাঁদের কাজ করতে দিন'। সুশান্তের সেইসময়কার মানসিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনও কিছু বলতে পারেননি রমেশ তোরানি। তার জবাব, আমি ফোনে কথা বলছিলাম, আমি কী করে জানব? তবে স্বাভাবিকই লেগেছিল সবকিছু যোগ করেন তিনি। পাশাপাশি এই আলোচনা একদম প্রাথমিক পর্যায়ের ছিল সেটিও জানতে ভোলেননি টিপস ফিল্মসের কর্ণধার।
সুশান্তের এজেন্ট উদয় সিং গৌরী টাইমস নাওয়েের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনায় আরও তথ্য দেন এই ভার্চুয়াল মিটিং নিয়ে। তিনি বলেন, 'ফোনে মূলত নিখিল আডবানি একটি ভাবনা (ছবির) সুশান্তের সঙ্গে ভাগ করে দেন। উনি মূলত কথা বলছিলেন সুশান্তের সঙ্গে। আপনারা ওনাকে প্রশ্ন করুন। আমাকে ওঁদের (নিখিল,রমেশ) তরফে ফোন করা হয়েছিল। আমি তারপর সুশান্তকে ফোন করেছিলাম। সেই কনফারেন্স কলে চারজন ছিল-নিখিল আডবানি, রমেশ তোরানি, আমি এবং সুশান্ত।
গৌরীর কথায়, সুশান্তের মানসিক পরিস্থিতি ফোনে স্বাভাবিকই লেগেছিল তাঁর। তবে যেহেতু নিখিল আডবানি তাঁকে ফিল্মের ন্যারেশন দিচ্ছিলেন তাই উদয়ের সঙ্গে সুশান্তের বিশেষ কোনও কথা হয়নি। তবে নিখিলের সঙ্গে কথোপথনে ঠিকঠাক প্রশ্নই ছবির ব্যাপারে করছিল সুশান্ত যোগ করেন বলিউডের অন্যতম বিখ্যাত এই এজেন্ট।
এরপর সুশান্তকে আরও একবার ফোন করেছিলেন উদয়,সুশান্তের নতুন প্রোজেক্ট কেমন লাগল সেই ব্যাপারে মতামত নিতে। সুশান্তের জানান তাঁর পছন্দ হয়েছে এবং তাঁদের চিত্রনাট্যের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।
এই ঘটনার মাত্র কয়েকঘন্টা পরেই, ১৪ই জুন বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্তের দেহ। মুম্বই পুলিশের দাবি আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত এবং সেই আত্মহত্যার পিছনে পেশাদার জগতের রেষারেষির উপর জোর দিয়েছেন তাঁরা। ‘আউটসাইডার’ হওয়ায় সুশান্তকে দূরে ঠেলে দিয়েছিল বলিউড, এমনই থিয়োরির উপরই জোর দেওয়া হয়েছিল।
যদিও সুশান্তের পরিবারের দাবি এর পিছনে রয়েছেন সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। গত ২৫শে জুলাই সুশান্তের বাবা কেকে সিং সুশান্তের আত্মহত্যার জন্য রিয়া ও তাঁর পরিবারকে দায়ী করে এফআইআর দায়ের করেন পাটনা পুলিশে। পরে তাঁর অনুরোধ মেনে এই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিহার সরকার। সেই আবেদনে মঞ্জুরি দিয়েছে কেন্দ্রও। বুধবারই সুশান্তের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র, এদিন সন্ধ্যাতেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে।