সতীশ কৌশিকের আচমকা মৃত্যুতে চোখের জল থামছে না পরিবারের। যে হাসিখুশি মানুষটা রঙের উৎসবে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিল, পরদিন তাঁর নিথর দেহ কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি আসবে তা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি সতীশের স্ত্রী আর মেয়ে। এই কঠিন বাস্তবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারছেন না তাঁরা, এর মাঝেই অভিনেতার মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যার আমন্ত্রণে দিল্লি গিয়েছিলেন সতীশ, সেই বিকাশ মালুই নাকি খুন করেছেন সতীশকে, এমন অভিযোগ এনেছেন ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় স্ত্রী। সেই রহস্যের তদন্তে দিল্লি পুলিশ। যদিও সেই বিতর্ককে উড়িয়ে দিয়েছেন সতীশের স্ত্রী।
বুকে পাথর রেখেই প্রয়াত অভিনতার স্ত্রী মিডিয়াকে জানান, বিকাশ মালুর প্রতি কোনও সন্দেহ নেই তাঁর। স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে সতীশের, খুনের তত্ত্ব মানতে চান না তিনি। এই পরিস্থিতিতে কেমন রয়েছে সতীশের পরিবার? প্রয়াত অভিনেতার ভাইপো নিশান্ত জানান, ‘পরিবার এখনও ওঁনার চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছে না। কঠিন পরিস্থিতি।’ সতীশের মুখাগ্নি করেছেন নিশান্ত, কাকার প্রযোজনা সংস্থা, সতীশ কৌশিক এন্টারটেনমেন্টের অন্যতম পার্টনার তিনি। নিশান্তের কথায়, সতীশের স্ত্রী শশী এবং মেয়ে বংশিকা খুবই ভেঙে পড়েছে।
আরও পড়ুন-বন্ধুকে ফুল-মালায় সাজিয়ে অঝোরে কান্না অনুপমের, সতীশের শেষকৃত্যে সলমন-রণবীররা
নিশান্ত বলেন, ‘কাকিমার অবস্থা খুবই খারাপ। উনি একদম চুপ করে গিয়েছেন, খালি কাকার স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন। বংশিকা সবার সামনে নিজেকে শক্ত দেখানোর চেষ্টা করছে। তবে একা থাকলেই ঘরের কোণায় পাথর হয়ে বসে থাকছে। অস্বতি কাজ করছে ওর মধ্যে’।
গত বুধবার দিল্লিতে পৌঁছেছিলেন সতীশ কৌশিক, বন্ধুদের সঙ্গে হোলির উৎসব পালনেই সেখানে হাজির হন তিনি। বিজবাসনের ফার্ম হাউজে ছিলেন সতীশ, সেখানেই মাঝরাতে অসুস্থবোধ করেন তিনি। এরপর গুরুগ্রামের ফর্টিস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে অভিনেতার।
আরও পড়ুন-১৫ কোটির জন্য় সতীশকে খুনের অভিযোগ তাঁর নামে, মুখ খুললেন ব্যবসায়ী বিকাশ মালু
১৯৮৫ সালে শশী কৌশিককে বিয়ে করেন শশীকে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সতীশ ও শশীর জীবনে আসে পুত্র সন্তান, কিন্তু মাত্র ২ বছর বয়সে মৃত্যু হয় সতীশ-শশীর ছেলের শানুর। এরপর নিশান্তকেই ছেলের মতো করে আগলে রেখেছিলেন দুজনে। ২০১২ সালে একজন সারোগেট মায়ের মাধ্যমে সতীশ-শশীর কন্যা বংশিকার জন্ম হয়। তখন সতীশের বয়স ছিল ৫৬ বছর। কিছুদিন আগেই ধুমধাম করে মেয়ে ১০ বছরের জন্মদিন পালন করেছিলেন সতীশ। পরিচিতদের কথায় মেয়ের জন্যই বেশিদিন বাঁচতে চেয়েছিলেন অভিনেতা, তবে সবকিছু শেষ হয়ে গেল মাত্র কয়েকঘন্টার ব্যবধানে।