গোটা কলকাতা এখন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে মগ্ন। দেশ বিদেশ থেকে আমন্ত্রিত, অভ্যাগতরা শহরে এসেছেন। কিছুদিন আগেই শহরে উপস্থিত ছিলেন বাদশাহ থেকে শাহেনশাহ, মহেশ ভাট থেকে কুমার শানু, অরিজিৎ, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সহ অনেকেই। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও শহরের বুকেই যে এক টুকরো অন্ধকার জড়ো হয়ে আছে সেটা অনেকের চোখেই এই চাকচিক্যের মাঝে ধরা পড়ছে না। কিন্তু যাতে এবার সেই দিকে সকলের চোখ যায় তার জন্য সরব হলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র।
এই প্রথমবার নয়। আগেও একাধিকবার নানান বিষয়ে সরব হয়েছেন অভিনেত্রী। পশুদের উপর অত্যাচার হোক কিংবা সাধারণ মানুষের সমস্যা কিংবা সরকারের বিভিন্ন কাজ সব নিয়েই তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। কেবল সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, রীতিমত পথে নেমে প্রতিবাদ করেছেন তিনি। এবার তাঁকে হবু চিকিৎসকদের বিষয়ে কথা বলতে শোনা গেল।
কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ডাক পাননি শ্রীলেখা মিত্র, এমনকি তাঁর ছবিও মনোনীত হয়নি। সেই নিয়ে তাঁর ক্ষোভ জমে আছে। কিন্তু সেসব ছেড়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা সম্পূর্ণ অন্য বিষয় নিয়ে লাইভ করলেন।
অভিনেত্রীর লাইভে উঠে এল আন্দোলনরত হবু চিকিৎসকদের কথা। এই লাইভে তিনি এক ছাত্রের বক্তব্য পড়ে শোনান। যদিও সেই ছাত্রের নাম তিনি নেননি পোস্টে। তিনি বলেন, 'কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে গত ২২ ডিসেম্বর ছাত্র, ছাত্রী সংসদের নির্বাচনের জন্য ডেট দেওয়া হয়। কিন্তু পরে সেই নির্বাচন বাতিল করা হয়।' তিনি কারণ হিসেবে বলেন, 'শাসকদল যখন দেখে যে তাঁদের দল মেডিকেল ইউনিয়ন ইলেকশনে কোনওভাবেই জিততে পারবে না তখন এই ইলেকশন বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপরই মেডিকেল কলেজের উপর হওয়া এই অগণতান্ত্রিক আক্রমণের বিরুদ্ধে ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করে। শুরু হয় অনশন। ২০০ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে অনশনের।'
চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়তে এসে নানান সমস্যায় পড়েছেন হবু চিকিৎসকরা। তাঁদের সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন রোগীরাও। অভিনেত্রী তাঁর পোস্টে জানান দুই, তিনজন অনশনকারী ইতিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর কথায়, 'এই বিষয়ে কলেজ কাউন্সিলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে ছাত্র, ছাত্রীদের মারা হয়, দেওয়া হয় খুনে হুমকিও।'
একদিকে যখন একদল ছাত্র ছাত্রী এভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তখন এভাবে সাড়ম্বরে ঘটে চলা চলচ্চিত্র উৎসব যেন কিছুতেই মানতে পারছেন না 'মানবিক' শ্রীলেখা। তিনি লাইভ শেষ হওয়ার আগে বলেন, 'ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হোক, অমিতাভ বচ্চন আসুক। শাহরুখ খানও আসুক। আমরা এসবেই ভুলে থাকি। আমরা ভুলে যাই। অন্যদিকে যাঁরা শিক্ষক হতে চান তাঁরা অনশন করবে, যাঁরা চিকিসক হতে চান তাঁরা অনশন করবে। আমরা কী করব? এটাই চলতে দেব তো? নিজেদের পিঠ বাঁচিয়ে চুপ করে থাকব। শাহরুখের সঙ্গে সেলফি তুলে পোস্ট করব। আমি এবার আপনাদের উপরেই সবটা ছাড়লাম।'