লতা মঙ্গলেশকের গাওয়া ‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো’ অন্যতম আইকনিক দেশাত্মবোধক গান। শুধু তাই নয়, এই গানের একটি ঐতিহাসিক তাত্পর্যও রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে এই গান উজ্জীবিত করে চলছে ভারতীয়দের। অথচ এই গান নিয়েই জাতীয় টেলিভিশনে ভুল তথ্য পরিবেশন করলেন ইন্ডিয়ান আইডলের বিচারক তথা সংগীত পরিচালক বিশাল দদলানি। এর জেরেই টুইটারে ব্যাপক পরিমাণে ট্রোলড হতে হল তাঁকে। ‘দদলানি ফ্যাক্টস’ হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করল মাইক্রোব্লগিং সাইটে। ট্রোলের মুখে পড়ে শেষমেষ ঘুরিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন বিশাল।
ঘটনাটি ঘটে ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে। একজন প্রতিযোগী লতা মঙ্গেশকরের এই গান পরিবেশন করবার পর বিশাল বলেন, ‘এই গানটা লতাজি প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর জন্য প্রায় ৭৩-৭৪ বছর আগে গেয়েছিলেন, ১৯৪৭ সালে যখন দেশ স্বাধীন হয়েছিল’। আদতে লতা মঙ্গেশকর এই গানটি ভারত-চিন যুদ্ধে (১৯৬২) শহীদ জওয়ানদের উত্সর্গ করে পরিবেশন করেছিলেন।
নেটিজেনরা হয়রান কীভাবে বিশাল এই মন্তব্যটি করলেন। এর জন্য তাঁকে ‘ইডিয়ট’ বলে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি নেট নাগরিকরা। চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কীভাবে এডিটের পরেও এই অংশটা শো থেকে বাদ দিল না সেটাও হয়রান করছে অনেককে। #DadlaniFacts নিয়ে একাধিক মিমে ছেয়ে গেয়ে গোটা টুইটার।
বিশাল দদলানি সোমবার সকালে টুইটারে নিজের ভুল স্বীকার করে লেখেন- ‘আমি দেখছি বেশকিছু ডানপন্থীরা আমার ‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো’ গানটি লতাজি নেহেরুর সামনে গেয়েছেন, এবং তারিখটি গড়বড় করায় অপমানিত হয়েছেন। আমার ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। তবে এই তারস্বরে চেঁচামেচি করা জাতীয়তাবাদীরা কোথায় ছিলেন যখন চোর্ণব পুলওয়ামায় ৪০ জন শহীদের মৃত্যুকে সেলিব্রেট করে টিআরপি বাড়ানোর কাজে লাগাচ্ছিল'।
মূলত চোর্ণব হিসাবে রিপাবলিক টিভির এডিটর ইন চিফ অর্ণব গোস্বামীকে কটাক্ষ করেন বিশাল। তবে তিনি ভুল স্বীকার করে নিলেও ট্রোলার কিন্তু থেমে যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, অ্যায় মেরে ওয়াতনকে লোগো গানটি কম্পোজ করেছিলেন সি রামচন্দ্র, এবং এটি লেখা কবি প্রদীপের। প্রথমবার এই গানটি লতা মঙ্গেশকর পারফর্ম করেছিলেন ১৯৬৩ সালের ২৬শে জানুয়ারি নয়া দিল্লির ন্যাশান্যাল স্টেডিয়ামে। সেই সময় দর্শকাসনে উপস্থিত ছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু ও রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ।