আর পাঁচটা রোগের কুকুরদের শরীরে ক্যানসারও দেখা দিতে পারে। ক্যানাইন লিম্ফোমা সেই তালিকায় অন্যতম। কুকুরদের ক্ষেত্রে এই ক্যানসার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। ক্যানাইন লিম্ফোমায় ক্যানসার কোষগুলো লিম্ফ নোডের মধ্যে তৈরি হয়। লিম্ফোসাইট এক বিশেষ ধরনের শ্বেত রক্তকণিকা। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
পোষ্য বিশেষজ্ঞ ও পেটকানেক্টের প্রতিষ্ঠাতা দেবাংশী শাহ জানাচ্ছেন, শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে থাকে লিম্ফ নোড। এই নোডগুলিতে নিয়মিত পদ্ধতিতে তৈরি হয় লিম্ফোসাইটস। সাধারণত টি ও বি সেল নামক দুই ধরনের লিম্ফোসাইট হয়। লিম্ফোমা ক্যানসার হল এর মধ্যে যেকোনও একটি লিম্ফোসাইটের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে নোডগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নোডগুলো থেকে ক্যানসার কোষ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে যক্কৃৎ, প্লীহা ও হাড়ের মজ্জায়।
পোষ্যের মধ্যে এই রোগ দেখা দিলে লিম্ফ নোডগুলি ফুলে যায়। এই নোডগুলো থাকে গলায়, চোয়াল ও মালাইচাকির পিছনে। ফলে এই অংশগুলোও ফুলে যেতে থাকে। এছাড়া খিদে কমে যাওয়া, শ্বাস নিতে সমস্যা, ওজন কমে যাওয়া, ক্লান্তভাব ইত্যাদি এই ক্যানসারের প্রধান লক্ষণ। পাশাপাশি তেষ্টা বেড়ে যাওয়া ও বারবার প্রস্রাব পাওয়ার মতো লক্ষণও দেখা যেতে পারে।
একেকরকম লিম্ফোমা ক্যানসারের ক্ষেত্রে একেকরকম লক্ষণ দেখা যায়। যেমন কাটেনিয়াস লিম্ফোমায় ক্ষেত্রে ত্বকের উপর শুস্ক আঁশের মতো ছোপ দেখা যায়। রোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের নানারকম সমস্যাও বাড়তে থাকে। আবার আন্ত্রিক লিম্ফোমা হলে বমি, ডায়রিয়া ও ওজন কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে থাকে।
লিম্ফোমা ক্যানসারের উপসর্গ পোষ্যের মধ্যে দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে প্রথমেই পশু ক্যানসার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন। ক্যানসারের চিকিৎসা তার পর্যায় অনুসারে নির্ধারিত হয়। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ডাক্তার জানিয়ে দেন পোষ্যের শরীরে ক্যানসার কোন পর্যায়ে রয়েছে। দেবাংশী জানালেন, এরপর পর্যায় বুঝে সার্জারি বা কেমোথেরাপির মতো চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য পোষ্যকে রেডিয়োথেরাপিও দেওয়া হতে পারে।