আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। ভয়াবহ এই রোগের সঙ্গে বহু যুগ ধরে লড়াইয়ের পর ধীরে ধীরে চিকিৎসাবিজ্ঞান এই মারণ রোগকে দমনে সাফল্য পেয়েছে। তবুও টিউবারকিউলোসিস (টিবি) বা যক্ষ্মা সম্পর্কে বহু ভুল ধারণা মানুষের মনে বাসা বেঁধে রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে সচেতনতার অভাব। চিকিৎসকরা বলছেন, এই রোগের ক্ষেত্রে সচেতনতা গড়ে তোলা খুবই জরুরি। আর সচেতন হতে গেলে আগেই চিনে নিতে হবে উপসর্গগুলিকে। ২ থেকে ৩ সপ্তাহ ধরে যদি কোনও কাশি থেকে যায়, তাহলে অবশ্যই সেক্ষেত্রে যোগাযোগ করতে হবে চিকিৎসকের সঙ্গে। দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন লক্ষণ দেখলে বোঝা যাবে যে টিবি হয়েছে?
টিবি সম্পর্কে কিছু ধারণা
যখন কোনও টিবি আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচেন বা কাশছেন, বা হাসছেন, তখন মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বায়ুবাহিত হয়ে তা একজন মানুষ থেকে অন্যজনের কাছে যায়। সাধারণত এরা ফুসফুসে আক্রমণ করে। এছাড়াও লিম্ফ গ্ল্যান্ড, পেট, শিরদাঁড়া, জয়েন্টে প্রভাব ফেলতে থাকে। তবে টিবিতে আক্রান্ত হওয়া খুব একটা সহজ নয়। মূলত অতিক্ষুদ্র ড্রপলেট দিয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে টিবি। তবে এতে সবাই আক্রান্ত হন না। অনেকেই উপসর্গহীন থাকেন। 'টিবি যদি সুপ্ত থাকে, তাহলে উপসর্গ দেখা যায় না,' বলছেন চিকিৎসক হরিশ শাফলে। তবে ওই ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি বেড়ে যায়, তাহলে টিবিকে হারিয়ে দেওয়া সহজ। চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী মূলত, টিবি তিন ধরনের হয়ে থাকে। পালমোনারি টিউবারকিউলোসিস, এক্সট্রাপালমোনারি টিউবার কিউলোসিস, অ্যাক্টিভ টিউবার কিউলোসিস। একনজরে দেখা যাক, টিবি হলে কোন কোন উপসর্গ দেখা যায়-
- ৩ সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে যদি একটানা কাশি চলতে থাকে, তাহলে সাবধান হতে হবে।
-বুকে ব্যথা থাকতে সতর্ক হতে হবে।
-কাশির সঙ্গে রক্ত পড়লে কাল বিলম্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
-এছাড়াও যদি খুবই দুর্বল লাগে, তাহলে সচেতন থাকতে হবে।
-ওজন কমে যেতে থাকলেও চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন।
-ক্ষিদে যদি কমে যায়, তাহলেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
- ঠান্ডা লাগতে থাকার প্রবণতা বাড়লে সতর্ক হোন।
-এছাড়াও জ্বর ও রাতের বেলা ঘামের সমস্যা থাকলে সতর্ক থাকতে হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, টিবির মতো রোগ নিয়ে যত বেশি গড়িমসি করবেন, তত ঠকবেন। যত তাড়াতাড়ি অল্পেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা যাবে, ততই সেরে উঠবে রোগ। চিকিৎসকরা বলছেন, ড্রাস-সেনসেটিভ টিউবার কিউলোসিস ছয় মাসে সেরে যায়। যদি সঠিক ওষুধ খাওয়া যায়। উপসর্গ দেখে অল্প থাকতেই চিকিৎসা শুরু করলে সুস্থ করা যায় টিবি রোগীকে।