ডায়াবিটিস মানে শুধুই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়া তেমনটা নয়। ডায়াবিটিস থেকে দেখা দিতে পারে নানারকম শারীরিক সমস্যাও। কিডনি ও হৃদযন্ত্রের রোগ এগুলোর মধ্যে প্রধান। তবে বিশেষজ্ঞদের মতামত, শারীরিক জটিলতার পাশাপাশি দেখা দিতে পারে মুডের সমস্যাও।
মুডের সমস্যা এই রোগের একটি প্রধান লক্ষণ। এমনটাই জানাচ্ছেন ডায়াবিটিস বিশেষজ্ঞরা। যখনই কাজ বা বিভিন্ন দায়িত্বের চাপ বাড়ে, তখনই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এই কারণেই চিকিৎসকরা ডায়াবিটিসের ওষুধ সম্পর্কে বিশেষভাবে সচেতন করেন। ওষুধ সময়মতো না খেলে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মুডও বিগড়ে যেতে পারে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ডায়াবিটিসের রোগীদের সহজেই মন খারাপ হয়। এছাড়াও এই রোগে ভুক্তভোগীরা রাগ সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন না। ছোট কোনও ঘটনা ঘটলেও রাগে ফেটে পড়েন। কখনও কখনও অনেক বেশি প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ফেলেন।
মাসিনা হাসপাতালের ডায়াবিটিস বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন, আবেগের সঙ্গে ডায়াবিটিসের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ডায়াবিটিস আমাদের আবেগকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখে। রোজকার জীবনে আমাদের নানারকম চাপ সামলাতে হয়। অনেক বিষয়েই আমাদের মনে খারাপ লাগা জমতে থাকে। সাধারণ অবস্থায় আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। তবে ডায়াবিটিস রোগীদের পক্ষে তা প্রায়ই সম্ভব হয় না।
কেন এমনটা হয়?
বেশকিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রাগ বা মন খারাপের ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করেই বেড়ে যাচ্ছে। মন বা শরীরের উপর অতিরিক্ত স্ট্রেস বা চাপ পড়লে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোনটিই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
কীভাবে রেহাই মিলবে?
- পর্যাপ্ত ঘুম মন ও শরীরের চাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই ডায়াবিটিসের সমস্যা দেখা দিলে নিয়মিত সময় ধরে ঘুমোনো দরকার।
- নিয়মিত ব্যায়াম করাও এই সময় যথেষ্ট উপকারী। ব্যায়াম করলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও মন খারাপ সহজেই দূর করা যায়। এর ফলে কর্টিসল হরমোনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- যেকোনও ঘটনায় কাউকে দোষারোপ করা বন্ধ করতে হবে। কেউ না কেউ দায়ী, এমন চিন্তা থেকেই রাগ বা মন খারাপের মতো সমস্যা দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজেকে পজিটিভ রাখার চেষ্টা করুন। তাহলেই এর থেকে রেহাই মিলবে।