এখন সমাজের নানা মহলে ঋতুস্রাব নিয়ে নানা ভুল ধারণা রয়েছে। কেউ কেউ এই বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলতেও অস্বস্তিতে থাকেন। কিন্তু এটি যে কোনও অসুখ নয়, অপরাধ নয়, এটির মধ্যে অপরিচ্ছন্নতার মতো কোনও ব্যাপার নেই— তেমনই বার্তা দিল উত্তরাখণ্ডের এক পরিবার। মেয়ের প্রথম ঋতুস্রাব তারা উদ্যাপন করল বড় সড় পার্টির আয়োজন করে।
উত্তরাখণ্ডের উধমসিংহ নগরের কাশীপুর সিটি এলাকার বাসিন্দা জিতেন্দ্র ভট্ট। হালে তাঁর কন্যা রাগিনীর প্রথম ঋতুস্রাব হয়েছে। সেই দিনটি উপলক্ষ্যেই একটি পার্টির আযোজন করেছিলেন জিতেন্দ্র এবং তাঁর স্ত্রী। সেখানে কেক কাটা হয়, বন্ধুদের এবং পাড়ার লোকজনকে ডাকা হয়। এবং জিতেন্দ্রর কন্যাকে উপহারও দেন অতিথিরা।
(আরও পড়ুন: দু’বছরে এক ধাক্কায় বয়স বেড়েছে ‘১০ বছর’! কোভিড কাদের এই বিপদের দিকে ঠেলেছে)
জিতেন্দ্র সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, ছোট থেকেই তিনি দেখে এসেছেন মেয়েদের ঋতুস্রাব হলেই তাঁদের ‘অশুভ’ হিসাবে দেখা হয়। ঠাকুরঘর থেকে রান্নাঘরে পর্যন্ত যেতে বাধা থাকত তাঁদের। সমাজের এই ধারণাকে ভাঙতেই তাঁর ১৩ বছর মেয়ে যখন প্রথমবার ঋতুমতী হয়, তখন জন্মদিনের মতোই উদ্যাপন করলেন সেই দিনটি। তাঁর মতে, ‘এটি তো সাধারণ একটি শারীরবৃত্তীয় ঘটনা। একে লুকিয়ে না রেখে বরং সকলের সঙ্গে উদ্যাপন করা উচিত।’
(আরও পড়ুন: এত বড় সিস্ট, এটাও সম্ভব! মহিলার জরায়ু অপারেশন করতে গিয়ে অবাক চিকিৎসকরা)
পাড়া প্রতিবেশী-সহ মেয়ের বন্ধুদেরও চিঠি পাঠিয়ে নিমন্ত্রণ করেন তিনি। মেয়ের বন্ধুরা এবং তাদের অভিভাবকরা সেই চিঠি পেয়ে অবাক। এমনটা যে হতে পারে, সে ভাবনা কারও ছিল না। জিতেন্দ্রর এই আমন্ত্রণ রক্ষা করতে এসে অনেকেই স্যানিটারি প্যাড এবং চকলেট উপহার দিয়েছেন তাঁর মেয়ে রাগিনীকে।
(আরও পড়ুন: বশ মানছে না স্বপ্ন! তাই নিজেই ড্রিল দিয়ে ঘিলু ঠিক করার চেষ্টা, এর পর যা হল)
এই গোটা ঘটনা রাগিণী বলে, ‘মেয়ের ঋতুস্রাবকে সমাজের কাছে এমনভাবে তুলে ধরা সব বাবা-মায়েরই উচিত। খুবই ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমি নিজেও বাবা-মায়ের মতো করে বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা বাড়তে চাই।
জিতেন্দ্রর স্ত্রী ভাবনাও স্বামীর এই পদক্ষেপের দারুণ প্রশংসা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই সামাজিক ভাবনাকে ভেঙে এমন পদক্ষেপ গ্রহণে তিনিও আগ্রহী হয়েছেন। সব মিলিয়ে ভট্ট পরিবারের এই ইতিবাচক ভাবনা সমাজের বহু মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী বদলে দেবে এমন কথাও অেকেই মনে করছেন।