বেহালা তথা কলকাতার সব থেকে পুরনো দুর্গাপুজো বললেই যে পুজোর কথা মাথায় আসে সেটা হল সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো। ৯৭৫ সালে আদিশূর ছিলেন এই বাংলার শাসক। বাংলায় যাতে বিন্দু ধর্ম স্বমহিমায় বজায় থাকে তার জন্য তিনি কনৌজ থেকে ৫ জন ব্রাহ্মণকে নিয়ে আসেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বেদগর্ভ, যাঁকে এই সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের আদিপুরুষ হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে।
১৬১০ সালে এই পরিবারে দুর্গাপুজো শুরু হয়। তখনও কলকাতাই সেভাবে গড়ে ওঠেনি তো দুর্গাপুজো! তখন বড়িশার এই সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারে শুরু হয় দুর্গাপুজো। প্রথমে গোলপাতা এবং মাটি দিয়ে আটচালা মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর কালক্রমে সেটা পাল্টে সিমেন্টের তৈরি আটচালা হয়। আর এখন প্রতি বছর দেবী দুর্গা সেখানেই পুজো পান।
এই সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো মন্দিরের থামগুলো এই বহু পুরনো পুজোর নানান ইতিহাসের সাক্ষী। যদিও এই পরিবারের একটি আদিপুজো ছিল কিন্তু পরে ১০-১১ টা আরও পুজো শুরু হয়। এখন বড়িশায় মোট ৬টা পুজো হয়। এই পুজোগুলো আটচালা বাড়ি, বড়বাড়ি, মেজ বাড়ি, মাঝের বাড়ি, বেনাকি বাড়ি, এবং কালীকিঙ্কর ভবন নামে প্রসিদ্ধ। এছাড়াও এই বাড়ির আরও দুটি পুজো হয় নিমতা এবং বিরাটি বাড়িতে।
বহু মানুষের সমাগম হয় এই বাড়িতে। ঠাকুর দেখার সঙ্গে ইতিহাসকে চাক্ষুষ করে আসেন অনেকেই। সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারে আজও সনাতনী নিয়ম রীতি মেনেই পুজো হয়ে থাকে। প্রতিবছরই গৌরবময় ইতিহাসের পাতায় একটা করে বছরের স্মৃতি যোগ হয়ে যায়।