অবশেষে কোভিড থেকে মুক্তি পেলেন ৫৯ বছরের মানুষটি। টানা ৪১১ দিন ধরে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এখনও পর্যন্ত এটিই কারও শরীরে দীর্ঘতম কোভিড সংক্রমণ।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ে ইংল্যান্ডের এই ব্যক্তির শরীরে। তিনি মৃদু উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু চিকিৎসা চলতে থাকে নিজের মতো, আর যত বারই কোভিড পরীক্ষা করানো হয়, দেখা যায় পরীক্ষার ফল পজিটিভই আসছে। জানুয়ারি মাসে পরীক্ষাও করিয়েও তাই আসে। হালে শেষ পর্যন্ত তাঁর শরীরে কোভিডের অস্তিত্ব নেই বলে ধরা পড়েছে।
কেন এত দিন ধরে কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন তিনি?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এই আক্রান্তের কিডনির সমস্যা রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই কিডনির অশুখে ভুগছেন তিনি। ফলে তাঁর রোগ প্রতিরোধ শক্তি এমনিতেই খুব দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। সেই কারণেই করোনার সঙ্গে লড়াই করার মতো প্রতিরোধ শক্তি তিনি পাচ্ছিলেন না। আর সেটিই তাঁর জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। টিকা বা অন্য প্রতিষেধকের সাহায্যেও তাঁর শরীরে করোনার সঙ্গে লড়াই করার মতো রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে ওঠেনি। যদিও তাঁর শরীরের অবস্থা খুব খারাপ নয়, গোটা সময়টিতেই তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণের মৃদু উপসর্গই দেখা গিয়েছে। কিন্তু তার পরেও তিনি করোনা থেকে পুরোপুরি মুক্ত হননি। আর সেটি নিয়েই দুশ্চিন্তায় ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
কোন ধরনের করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি?
এ বিষয়েও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অত্যাশ্চার্য এক ঘটনা। দেখা গিয়েছে, একেবারে গোড়ায় উহানে যে ভ্যারিয়েন্টটি ছড়িয়ে ছিল এই ব্যক্তির শরীরেও সেই ভ্যারিয়েন্টই রয়ে গিয়েছে। এমনকী করোনাভাইরাসের যে তার পরে এতগুলি রূপ পরিবর্তন হয়েছে, তারও প্রভাব পড়েনি এই ব্যক্তির শরীরে। সেই আদি কোভিড-১৯ ভাইরাসটিই তাঁর শরীরে থেকে গিয়েছে।
কীভাবে সুস্থ হলেন তিনি?
জানা গিয়েছেন, চিকিৎসকরা তাঁর উপর এমন কিছু অ্যান্টিবডির প্রয়োগ করেন, যেগুলি করোনার সব ধরেনর রূপের বিরুদ্ধে কার্যকর। আর শেষ পর্যন্ত তেমন একটি অ্যান্টিবডির প্রভাবেই সেরে উঠেছেন ৫৯ বছরের এই ব্যক্তি।
আপাতত তিনি করোনামুক্ত। তবে ভবিষ্যতে যে আবার করোনার অন্য কোনও রূপে তিনি আক্রান্ত হবেন না, এমন কথাও জোর দিয়ে বলতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা।