তালাক-এ-হাসান এবং তিন তালাকের মধ্যে প্রভেদ আছে। এমনই বলে দেওয়া হল সর্বোচ্চ আদালতের তরফে। কারণ এখানে মহিলাদের মতামত জানানোর সুযোগ রয়েছে। যুক্তি হিসাবে এটিই জানানো হয়েছে।
হালে বেনজির হিনা নামে এক আবেদনকারী ‘তালাক-ই-হাসান’ এবং অন্যান্য ‘একতরফা বিচার বহির্ভূত তালাক’কে বাতিল করার আবেদন করেছিলেন। তিন তালাকাকে শীর্ষ আদালত অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করলেও, ‘তালাক-ই-হাসান’ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আবেদনকারী এই প্রথা ‘স্বেচ্ছাচারী, অযৌক্তিক এবং মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনকারী’ বলে দাবি করে সর্বোচ্চ আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন এটি বাতিল করার। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতে আদালতের তরফে বলা হয়েছে, তালাক-ই-হাসান সেই অর্থে তিন তালাক নয়। এক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য ‘খুলা’র বিকল্পও রয়েছে। এই মামলার পরের শুনানি হবে ২৯ অগস্ট।
কী এই তালাক-এ-হাসান?
এই বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তিন মাস ধরে প্রতি মাসে একবার করে ‘তালাক’ উচ্চারণ করতে হয়। তৃতীয় মাসে তালাক উচ্চারণের সময়েও যদি স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে না থাকেন, তাহলে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। প্রথম বা দ্বিতীয় তালাক উচ্চারণের পর, যদি তাঁরা একসঙ্গে থাকা শুরু করেন, তাহলে বিচ্ছেদ হয় না।
এই মামলার শুনানির ক্ষেত্রে বিচারপতি এস কে কওল এবং এম এম সুন্দরেশের বেঞ্চ বলেছে, যদি স্বামী এবং স্ত্রী একসঙ্গে থাকতে না পারেন, তাহলে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪২-এর অনুযায়ী তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হতে পারে।
ইসলাম ধর্মে পুরুষদের ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য তালাক নিতে হয়। অন্যদিকে, মহিলারা ‘খুলা’র মাধ্যমে বিয়ে ভেঙে দিতে পারেন। সেই সুযোগ এই তালাক-এ-হাসান-এর ক্ষেত্রে রয়েছে বলেই একে তিন তালাকের মতো ‘বেঠিক’ মানতে চায়নি সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের তরফে বলা হয়েছে, আমরা আবেদনকারীদের সঙ্গে একমত নই। আমরা চাই না, এটা অন্য কোনও কারণে এজেন্ডা হয়ে উঠুক।
যদিও আবেদনকারীর দাবি, তিনি নিজেই এই ধরনের বিচ্ছেদের শিকার হয়েছেন। দেশের সকল নাগরিকের জন্য বিবাহবিচ্ছেদের নিরপেক্ষ এবং অভিন্ন পদ্ধতি তৈরির জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হোক। এই মর্মে তিনি আদালতে আবেদন জানিয়েছেন।