ঘুমের মধ্যেই হাত-পা স্থির হয়ে আসে। কথা বলা তো দূর, পাশে কেউ থাকলে তাকে যে ডাকবেন সেই ক্ষমতাও নেই। অনেকে ব্যাপারটিকে ভূতে ধরা, নিশির ডাক বলে মনে করেন। আসলে কি সত্যিই কাউকে ভূতে ধরে? নাকি অন্য কিছু!
ডাক্তারি ভাষায় একে বলে স্লিপ প্যারালাইসিস বা ঘুমের মধ্যে পক্ষাঘাত। স্লি্প প্যারালাইসিস এমন একটি অবস্থা যেখানে ব্যক্তির শরীর কিছুক্ষণের জন্য অবশ হয়ে যায়। নড়াচড়া তো দূর, কাউকে যে ডাকবেন সেই উপায়ও থাকে না। তবে কিছু সময় পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়। এই সময় রোগীর মনে নানা উদ্বেগ তৈরি হয়। কেন এমন হচ্ছে ভেবে ভয় অনেকে পেয়ে যান। চলতি ভাষায় একে বলে বোবায় ধরা। গবেষণায় দেখে গিয়েছে, কমবয়সি বিশেষত ২২-৩৫ বছরের মানুষদের মধ্যে এই সমস্যা লক্ষ্য করা যায়।
স্লিপং প্যারালাইসিস কী?
স্লিপিং প্যারালাইসিস হল মস্তিষ্কের রোগ। মানুষ যখন গভীর ঘুমের মধ্যে থাকে, স্বপ্ন দেখে তখনই এমন অবস্থা তৈরি হয়। এই সময়টিকে চিকিৎসকেরা বলেন র্যাপিড আই মুভমেন্ট রেম। উল্লেখ্য, এমতাবস্থায় শরীরের আর কোনও পেশি কাজ করে না।
স্লিপ প্যারালাইসিস কেন হয়?
ব্রিটেনের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা বা এনএইএস-এর ডাক্তাররা স্লিপ প্যারালাইসিস হওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণকে নির্দেশ করেছেন যেমন--
নেতিবাচক চিন্তাভাবনা। মানুষ যদি হতাশায় থাকে, কোনও কিছু নিয়ে অতিরিক্ত ভয়ে থাকে, তাহলে এই সমস্যা হয়।
অতিরিক্ত মদ্যপান, নিয়মিত ধূমপান করলেও হয়।
যাঁদের ঘুম খুব পাতলা, ঘুম আসতে চায় না বা পর্যাপ্ত ঘুম হয় না তাদের এই সমস্যা বেড়ে যায়।
স্লিপ প্যারালাইসিসের লক্ষণ
নেতিবাচক শক্তি অনুভব করা।
মনে হবে আপনার সঙ্গে অন্য কেউ ঘরে আছে।
হাত, পা অবশ হয়ে যাওয়া, সেই সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য কথা বলতে না পারা।
বুকে এবং গলায় চাপ অনুভূত হওয়া।
শরীর ঘেমে যাওয়া ইত্যাদি
স্লিপ প্যারালাইসিস থেকে বাঁচার উপায়
মনে রাখবেন, স্লিপ প্যারালাইসিস কোনও বড় রোগ নয়। কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই এই সমস্যাকে এড়ানো সম্ভব
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকুন
রোজ পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুমান, দিনে প্রায় ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম খুবই জরুরি
ঘুমনোর আগে মোবাইল, ল্যাপটপ বিছানা থেকে দূরে রাখুন
ঘুমনোর আগে নিজেকে রিলাক্স করুন
কোলাহল এড়িয়ে চলুন
তবে, স্লিপ প্যারালাইসিস যদি বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছয়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।