বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > সরকারি স্কুলের অর্ধ্বেক শৌচাগারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও নেই, দাবি CAG রিপোর্টে

সরকারি স্কুলের অর্ধ্বেক শৌচাগারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাও নেই, দাবি CAG রিপোর্টে

সমীক্ষার অন্তর্গত ৬৯১টি শৌচাগার জল, পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, ক্ষয়ক্ষতি বা অন্যান্য কারণে ব্যবহারযোগ্য নয়।

জলের অভাব, খারাপ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ছেলে ও মেয়েদের পৃথক শৌচাগারের অভাবে কোভিড পরিস্থিতিতে চরম দুর্বিপাকে পড়ুয়ারা।

কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের প্রকল্পের অধীনে সরকারি স্কুলে তৈরি শৌচাগারগুলির অর্ধ্বেকেই ন্যূনতম হাত ধোয়ার সুবিধাও নেই। সম্প্রতি এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গিয়েছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল-এর (সিএজি) রিপোর্টে।

রিপোর্ট অনুসারে, কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি স্কুল শৌচাগারগুলিতে নলবাহিত জলের অভাব, খারাপ রক্ষণাবেক্ষণ এবং ছেলে ও মেয়েদের পৃথক শৌচাগারের অভাবে কোভিড পরিস্থিতিতে চরম দুর্বিপাকে পড়েছে পড়ুয়ারা। মোট ২,০০০ স্কুলে সমীক্ষা চালিয়ে বুধবার সংসদে এই রিপোর্ট পেশ করেছে সিএজি।

রিপোর্ট অনুযায়ী, স্বচ্ছ বিদ্যালয় অভিযান প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রীয় সিপিএসসি তালিকাভুক্ত সংস্থার সাহায্যে সরকারি স্কুলগুলিতে শৌচাগার নির্মাণ করে তৎকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক অধুনা শিক্ষা মন্ত্রক। ২০০৯ সালের শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষার অধিকার আইনে স্কুলপড়ুয়া ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচাগার নির্মাণ করার নির্দেশ রয়েছে।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের নির্দেশে মোট ১,৪০,৯৯৭টি শৌচাগার গড়ে ৫৩টি সিপিএসসি সংস্থা। এর মধ্যে এনটিপিসি, পিজিসিআইএল, পিএফসি, আরইসি, ওএনজিসি এবং সিআইএল তৈরি করে ১,৩০,৭০৩টি শৌচাগার। খরচ হয় মোট ২,১৬২.৬০ কোটি টাকা। ১৫ রাজ্যে মোট ২,০৪৮ স্কুলে ২,৬৯৫টি শৌচাগার পরিদর্শন করে সিএজি।

দেখাগিয়েছে, ৮৩টি শৌচাগার তালিকার অন্তর্ভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়নি। বাকি ২,৬১২টি শৌচাগারের মধ্যে ২০০টি তালিকাভুক্ত স্কুলে নির্মাণ হয়নি এবং ৮৬টি শৌচাগারের নির্মাণ সম্পূর্ণ হয়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরিদর্শন করা শৌচাগারগুলির মধ্যে ১১ শতাংশে আংশিক নির্মাণ হয়েছে।

১,৯৬৭টি কোএডুকেশনাল স্কুলের মধ্যে ৯৯টিতে কোনও চালু শৌচাগার নেই এবং ৪৩৬টি স্কুলে মাত্র একটি করে শৌচাগার রয়েছে। ৫৩৫টি স্কুলে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক শৌচাগার নির্মাণ করা হয়নি। 

যে ২,৩২৬ নির্মিত শৌচাগার সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তার মধ্যে ৩০% অর্থাৎ ৬৯১টি জল, পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, ক্ষয়ক্ষতি বা অন্যান্য কারণে (যার মধ্যে রয়েছে শৌচাগার যথাযথ উদ্দেশে ব্যবহার না করা) ব্যবহারযোগ্য নয়।

তা ছাড়া, ২,৩২৬টির মধ্যে ৫৫% অর্থাৎ ১,২৭৯টি নির্মিত শৌচাগারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা নেই। সেই সঙ্গে রয়েছে ত্রুটিযুক্ত নির্মাণ, সিঁড়ির অভাব, ভাঙাচোরা বা উপচে পড়া লিচ পিটের মতো বিবিধ সমস্যা। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, ১,৮১২২টি শৌচাগারের মধ্যে ৭১৫টি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না এবং ১,০৯৭টি শৌচাগার সপ্তাহে দুই বার বা মাসে একবার পরিষ্কার করা হয়। 

এ বাদে, সমীক্ষার অন্তর্ভুক্ত ৭৫ শতাংশ শৌচাগারেই সাবান, বালতি, কীটনাশক ইত্যাদির ব্যবস্থা না থাকায় স্বাস্থ্যকর নয় বলেও জানানো হয়েছে রিপোর্টে। সমস্যার সমাধানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে সিএজি। 

সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত শৌচাগারগুলি যে হেতু মোট নির্মিত শৌচাগার সংখ্যার মাত্র ২ শতাংশ, সেই কারণে বাকি ৯৮ শতাংশ শৌচাগার পরিদর্শন করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সিপিএসসি সংস্থাগুলিকে।

 

বন্ধ করুন