রাজ্য সভার চেয়ারম্যান তাঁদের সাসপেন্ড করলেও সংসদ চত্বর না ছেড়ে পালটা প্রতিবাদ অবস্থানে বসলেন ৮ বিরোধী সাংসদ।
‘কৃষকদের জন্য আমরা লড়ব,’ প্ল্যাকার্ড হাতে সোমবার সংসদ ভবনের বাইরের লনে বিক্ষোভ অবস্থানে বসেছেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন ও দোলা সেন, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিং, কংগ্রেসের রাজীব সাতাব, রিপুন বোরা ও সৈয়দ নাসির হুসেন এবং সিপিএম-এর কে কে রাগেশ ও এলামারাম করিম।
কিছু কিছু বিরোধী সাংসদ আবার সংসদ চত্বরে গান্ধীমূর্তির সামনেও বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেছেন। বিশৃঙখ্লার অভিযোগে ৮ সাংসদ সাসপেন্ড হওয়ার বিরোধিতায় তাঁর প্রতিবাদে নেমেছেন। কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক উপায়ে তাড়াহুড়ো করে বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিন্দনীয়। রাজ্য সভায় আমাদের সাংসদদের মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।’
রবিবার রাজ্য সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের পেশ করা দুটি কৃষি বিল নিয়ে প্রতিবাদের মাঝে ওয়েলে নেমে পড়েন বিরোধী সাংসদরা। ডেপুটি চেয়ারম্যানের সামনে পৌঁছে গিয়ে রুলবুক ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানান তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। কৃষকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে বলে তুমুল হইচই শুরু করে দেন বিরোধীরা।
বিরোধী সাংসদদের এই আচরণ ‘দুর্ভাগ্যজনক, নিন্দনীয় ও গ্রহণযোগ্য নয়’ বলেন উপ-রাষ্ট্রপতি তথা রাজ্য সভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু। তাঁর মতে, বিরোধীদের এই আচরণে সংসদের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
গোলমালের মধ্যেই গতকাল দুটি কৃষি বিল পাশ করিয়ে নেয় কেন্দ্র। এই কারণে দিনটি ‘কালা দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেন বিরোধীরা। পরে সন্ধ্যায় এক সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধীদের সমালোচনা করে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্তে্রী রাজনাথ সিং জানান, সংশ্লিষ্ট সাংসদদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য সভার চেয়ারম্যান।
সোমবার অধিবেশন শুরু হওয়ার পরে অভিযুক্ত ৮ সাংসদকে সাসপেন্ড করার আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় সরকার। বিরোধীদের প্রতিবাদের মাঝেই ধ্বনিভোটে ওই আবেদন গৃহীত হয়। তবে সাসপেন্ড হওয়ার পরেও সংসদ চত্বর ছাড়তে অস্বীকার করেন ৮ বিরোধী সাংসদ। সেখানে বসেই তাঁরা রাজ্য সভার চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন।
কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি বলেন, ‘চেয়ারম্যান নির্দিষ্ট কোনও সাংসদের নাম বললে, নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে সংসদ ত্যাগ করতে হয়। এই নির্দেশ এর আগে কেউ অমান্য করেননি। কিন্তু ৮ বিরোধী সাংসদ অভদ্রতা করেছেন, েই আচরণ এক রকমের গুন্ডাগিরি। ওঁরা প্রমাণ করেছেন যে, গণতন্ত্রের প্রতি ওঁদের বিশ্বাস নেই।’
প্রতিবাদ শুরু হলে ২০ মিনিটের জন্য অধিবেশন স্থগিত রাখেন নাইডু। তাতেও গোলমাল না থামলে এ দিনের জন্য রাজ্য সভার অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যায়।