রাহুল সিং
গালওয়ান উপত্যকায় কুড়ি জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পরে নড়েচড়ে বসেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। রুলস অফ এনগেজমেন্ট অর্থাত্ যুদ্ধনীতির ক্ষেত্রে বড় বদল আনল সেনা। সেই অনুযায়ী, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন থাকা কম্যান্ডারদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার পরিস্থিতি বিচার করে। দুই বরিষ্ঠ অফিসারের সূত্রে এই কথা জানা গিয়েছে।
এখন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে আর বিধিনিষেধ থাকল না। তাই খুব প্রয়োজন পড়লে হাতে যা আছে, সবকিছু ব্যবহার করার ছুট মিলল এবার। গালওয়ানে চিনা হানায় কুড়িজন সেনার মৃত্যুর পর বদলানো হল এই রুলস অফ এনগেজমেন্ট।
সর্বদলীয় সভায় মোদী বলেছিলেন যে সেনাকে পুরো স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে সীমান্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার। এটি চিনকে জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিষ্ঠ এক অফিসার বলেন যে নিয়ম বদল হওয়ার ফলে, ভারতীয় কম্যান্ডারদের হাত বাঁধা থাকবে না আর। তারা যেটা ঠিক মনে করবেন, সেই অনুযায়ী এলএসিতে ব্যবস্থা নেবেন। চিনের ঘাতক কৌশলকে মোকোবিলা করার জন্যেই নিয়ম বদল করা হল।
সেই অফিসার বলেন যে কিছুদিন ধরেই নিয়ম বদল করার প্রয়োজনীয়তা বোধ হচ্ছিল সীমান্তে সংঘর্ষের ফলে। তবে গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরেই এল সম্মতি।
প্যাংগং সো তে গত মাসের ৫-৬ তারিখ ও গালওয়ান উপত্যকায় মধ্য মে তে ছোটাখাটো সংঘর্ষ হয়। প্রতিবারই দল বেঁধে এসেছিল চিনা বাহিনী ডাণ্ডা ও লোহর আংটা লাগানো রড নিয়ে। যোগ্য জবাব প্রতিবারই ভারতীয় বাহিনী দিয়েছে বলে সেই সেনা অফিসার জানান।
গালওয়ানে সংঘর্ষের সময় কেন সেনাদের কাছে বন্দুক ছিল না, এই প্রশ্ন করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তখন বিদেশমন্ত্রী জানান বাহিনীর কাছে বন্দুক থাকলেও, ১৯৯৬ ও ২০০৫-এর বোঝাপড়া অনুযায়ী সংঘর্ষের ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয় না।
এলএসির ধারে যে সেনারা আছেন, তারা পিঠে গান নিয়ে ঘোরেন। গুলি রাখেন পাউচে। ১৯৯৬ ও ২০০৫ সালের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মোতাবেক প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই কিলোমিটারের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অবকাশ ছিল না। সেই অনুযায়ী এতদিন নিয়ম মানত ভারত। কিন্তু চিনের আগ্রাসন রুখতে এবার রণনীতি বদল করল নয়াদিল্লি।
...