মোদী-শাহের আশ্বাসে ভেজেনি চিঁড়ে, কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে বৈঠকে BJP-র শীর্ষ নেতারা

কেন্দ্রের আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।

দুপুরে হায়দরাবাদে অমিত শাহ। (ছবি সৌজন্য পিটিআই)

ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেছিলেন অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদীরা। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। উলটে সরকারের প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। সেই প্রবল চাপের মুখে কৃষক বিক্ষোভ নিয়ে বৈঠকে বসলেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। 

সূত্রের খবর, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার বাসভবনের সেই বৈঠকে হাজির আছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংরা। 

উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের ২৪ ঘণ্টা আগেই চাষিদের নয়াদিল্লির বুরারির মাঠে সরে যাওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন শাহ। তিনি জানিয়েছিলেন, কৃষকরা যাতে গণতান্ত্রিক এবং শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভে সামিল হতে পারেন এবং তাঁদের সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, সেজন্য উত্তর দিল্লির মাঠে জল, শৌচাগার এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

বিক্ষোভরত চাষিদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের লাঠিচার্জ এবং জলকামান ব্যবহারের পর শাহ বলেছিলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দেশের কয়েকটি অংশের কৃষকরা দিল্লির সীমান্তে এসেছেন। গতকাল (শুক্রবার) থেকে চাষিরা পঞ্জাবের দুটি গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ের কাছে জমায়েত করে আছেন। প্রবল ঠান্ডার কারণে কৃষকরা অনেক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। অন্যান্য মানুষরাও সমস্যার মুখে পড়ছেন।’

তারইমধ্যে গতরাতে দিল্লি ও আশপাশের এলাকায় জমায়েত হওয়া ৩২ টি কৃষক সংগঠনকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা জানিয়েছিলেন, কৃষকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় তৈরি আছে উচ্চপর্যায়ের একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী। একইসঙ্গে বুরারির মাঠে সরে যাওয়ার শর্তে আগেই আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

রবিবার সকালে মাসিক রেডিয়ো অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, কৃষিক্ষেত্রে সংস্কারের ফলে চাষিরা নয়া সুযোগ পেয়েছেন।  বলেন, ‘ভারতের কৃষি এবং সেই সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে নয়া দিক যোগ হচ্ছে। গত কয়েকদিনে কৃষিক্ষেত্রে যে সংস্কার হয়েছে, তা আমাদের চাষিদের জন্য সম্ভাবনার নয়া দিগন্ত উন্মোচন করেছে।’

তাতে অবশ্যও চিঁড়ে ভেজেনি। বরং কেন্দ্রের আলোচনার প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের পঞ্জাবের প্রেসিডেন্ট সুরজিৎ এস ফুল বলেন, 'কেন্দ্র যে শর্ত চাপিয়েছে, তা কৃষকদের পক্ষে অপমানজনক। আমরা কখনও বুরারিতে যান না। ওটা পার্ক নয়, ওটা খোলা জেল।' পাশাপাশি নিখিল ভারত কিষাণ সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির তরফে দাবি করা হয়, আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে অথবা মন্ত্রীদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। তাঁদের ব্যাখ্যা, ‘দেশের সব সিদ্ধান্তই নেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও গত আলোচনায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু আমরা জানি না তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে কি না। পরবর্তী সব আলোচনার জন্য আমরা চাই সর্বোচ্চ রাজনৈতিক স্তর অনুমোদিত মন্ত্রিসভার কমিটি অথবা মন্ত্রীদের দলের সঙ্গে বসতে।’