লাগাতার দু'দিনের রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত বাংলাদেশ। হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশ জুড়ে পরিবহণ ধর্মঘট ডেকেছিল সেদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। সঙ্গে বিএপনি নেত্রী তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও তুলেছে বিএনপি। এই আবহে বিভিন্ন জায়গায় মিছিল বের করেছিল বিএনপি। ছড়িয়েছে হিংসা। ঝরেছে রক্ত। এই আবহে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকার রাস্তায় বর্ডার গার্ডকে নামিয়ে দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গভীর রাতে একটি বৈঠক ডাকেন। পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন আসাদুজ্জামান।
আগামী বছরই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার রাস্তায় মিছিল বের করেছিল সেদেশের বিরোধী দলগুলি। আর সেই মিছিল থেকেই ছড়ায় হিংসা। বিরোধী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে সেদিন মৃত্যু হয়েছিল এক পুলিশকর্মীর। এদিকে এক বিক্ষোভকারীরও মৃত্যু হয় সেদিনের সংঘর্ষে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকার রাস্তায় পরপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। গ্রেফতার করা হয় হাজারেরও বেশি বিরোধী সমর্থকদের। শনিবারের সেই হিংসার পর রবিবারও পরিস্থিতি থমথমে ছিল রাজধানীতে। রবিবারও দু'জনের মৃত্যু হয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গত শনিবার বাংলাদেশের দু'টি প্রধান বিরোধী দল - বিএনপি এবং জামাতের প্রায় লক্ষাধিক সমর্থক মিছিল বের করেছিল ঢাকায়। তাদের দাবি ছিল, নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে। বদলে গঠন করতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন নির্বাচন হলে তা সুষ্ঠু হবে না। এই আবহে হাসিনার সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল বের হয়। সেই মিছিল পুলিশের বাধা পেতেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালায় বিরোধী সমর্থকরা। পুলিশের যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা চালানো হয়।
এদিকে বিরোধীদের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দিয়েছিল। পুলিশই তাদের ওপর হামলা চালায়। এই আবহে হিংসার বহু ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা যায়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রবারের গুলি ছুড়ছে। এদিক বিক্ষোভকারীরাও পালটা পাথর ছুড়েছে পুলিশকে লক্ষ্য করে। এই আবহে ঢাকা পুলিশের মুখপাত্র ফারুক হোসেন সংবাদসংস্থাকে জানান, হিংসার জেরে ১ জন পুলিশকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সেই পুলিশকর্মীর মাথায় কোপ বসানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃত পুলিশকর্মীর নাম আমিরুল ইসলাম। এছাড়াও হিংসায় ১০০-র বেশি পুলিশকর্মী জখমও হয়েছেন। এদিকে বিএনপি অভিযোগ করেছে, পুলিশের হামলায় তাদের দলের এক তরুণ সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। সেই বিএনপি কর্মীর নাম শামিম মোল্লা। হিংসার জেরে রবিবরও বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে দুই রাজনৈতিক কর্মীর।