দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে করোনার জেরে লকডাউনে কাটাতে হয়েছে চিনা নাগরিকদের। শেষ পর্যন্ত আর না পেরে শি জিনপিংয়ের 'জিরো কোভিড নীতি'র বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছিলেন কয়েক হাজার চিনা নাগরিক। চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে লকডাউন তুলতে হয়েছিল চিনা প্রশাসনকে। এরপরই সেদেশে শুরু হয়েছিল মৃত্যু মিছিল। এবছরের জানুয়ারি মাসে কোভিড ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল চিনে। তবে ফেব্রুয়ারিতে ধীরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে আবারও ফ্লু-এর প্রকোপে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চিনে। জানা গিয়েছে, চিনের উত্তর-পশ্চিমী শহর শিয়ানে ইতিনমধ্যেই কোভিডের মতো লকডাউন জারি করা হয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ রুখতে। (আরও পড়ুন: 'ভারতকে ভালোবাসি',হোলির দিন দিল্লিতে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েও যা বললেন বিদেশিনী)
ব্লুমবার্গের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সপ্তাহে চিনে ফ্লু-এর পজিটিভিটি রেট বা আক্রান্তের হার ছিল ২৫.১ শতাংশ। সেই হার এই সপ্তাহে একলাফে বেড়ে ৪১.৬ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। এদিকে এই সময়কালে কোভিডে আক্রান্তের হার কমেছে সেদেশে। আগের সপ্তাহে যেখানে চিনে কোভিড আক্রান্তের হার ৫.১ শতাংশ ছিল, এই সপ্তাহে সেই হার নেমে দাঁড়িয়েছে ৩.৮ শতাংশে। তবে এরই মাঝে চিনের শিয়ান শহরে জারি করা হয়েছে কোভিডকালীন লকডাউন। সেই শহরের জনসংখ্যা ১.৩ কোটি। এর আগে ২০২১ সালে কোভিডের সময় প্রায় এক মাসের জন্য পূর্ণ লকডাউনে কাটাতে হয়েছিল এই শহরের বাসিন্দাদের। এবার ফ্লু-এর জেরে ফের সেই লকডাউন বিভীষিকা ফিরছে সেই শহরে।
এদিকে মার্কিন সংবাদ চ্যানেল সিএনএন-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, 'চিনা টুইটার' উইবো-তে অনেক চিনা নাগরিক দাবি করেছেন, এভাবে লকডাউন জারি না করে টিকাকরণের ওপর জোর দিতে পারে প্রশাসন। উল্লেখ্য, শানশি প্রদেশে অবস্থিত শিয়ান শহর চিনের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। এদিকে চিনে যেখানে জাতীয় স্তরে ফ্লু প্রতিরোধ করার জন্য কোনও নীতি নির্ধারণ করা হয়নি, সেখানে শিয়ান শহরে এভাবে লকডাউন জারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কোটি কোটি চিনা নাগরিক। এদিকে চিনের ওষুধের দোকানগুলিতে ফ্লু-এর ওষুধের আকাল দেখা দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে একাধিক রিপোর্টে। এই আবহে লকডাউন জারি হলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে লকডাউনের সময় চিনে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে খাদ্য সামগ্রীক আকাল দেখা দিয়েছিল। অনেক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, লকডাউনের সময় আম চিনা নাগরিকরা অভুক্ত অবস্থায় দিন কাটিয়েছিলেন দিনের পর দিন। আবারও সেই দিনগুলি ফিরে আসবে কিনা, এখন সেই শঙ্কায় রয়েছেন চিনের কোটি কোটি মানুষ।