গত মাসে দেশের ১৮টি রাজ্যে করোনার ডবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মেলে। মাত্র এক মাসের মধ্যেই সেই ভ্যারিয়েন্টই হয়ে উঠেছে সবচেয়ে কমন। ২ লাখেরও বেশি দৈনিক সংক্রমণের পেছনে রয়েছে এই শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
নতুন ভ্যারিয়েন্টটি B.1.617 নামে চিহ্নিত। এর প্রভাব জানতে গত ২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত ৬০ দিনের করোনা সংক্রমণের জিনের তথ্যাবলী খতিয়ে দেখেন গবেষকরা। দেখা যায়, এই দুই মাসে মোট করোনা সংক্রমণের ২৪%-ই হয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে। গত ৫ অক্টোবর প্রথম এই ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কৃত হয়।
অনেকটাই বেশি সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্ট। যার ফলে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে দেশের এতগুলি রাজ্যে। শুধু তাই নয়, ভ্যাকসিন গ্রহণ করা কোনও ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধের পর্দাও কিছুটা হলে ভাঙতে সক্ষম এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট। আগেই করোনা হয়েছে, এমন ব্যক্তিও আবার আক্রান্ত হতে পারেন ভাইরাসের ডবল মিউটেশনে।
এর পরেই যেটি সবচেয়ে বেশি মিলছে, তা হল ইউকে ভ্যারিয়েন্ট। প্রায় ১৩% পজিটিভ নমুনার ক্ষেত্রেই মিলেছে এই ভ্যারিয়েন্ট। মহারাষ্ট্রে হঠাত্ করোনা সংক্রমণ চরমে পৌঁছানোর পিছনে মূলত এই দুই ভ্যারিয়েন্টকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এরজন্য যে শুধু ডবল মিউট্যান্ট বেশি সংক্রামক - তা মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজির প্রধান ডঃ রাকেশ মিশ্রর মতে, 'ডবল মিউট্যান্ট যে বাড়ছে, তা সত্যি। কিন্তু তার মানে এটি অনেক বেশি সংক্রামক, এমন কোনও কথা নেই। ব্রিটেনে যেমন নয়া ভ্যারিয়েন্ট বৃদ্ধি শুরু হতেই লকডাউন হয়। তারপরেই সেই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়া বন্ধ হয়ে যায়।' অর্থাত, ভ্যারিয়েন্ট যেমনই হোক, আমজনতার করোনা সতর্কতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এমনই মত সিংহভাগ বিশেষজ্ঞদের। তাই মাস্ক পরা, হাত ধোওয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ববিধিই এখনও প্রধান অস্ত্র।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২১৭,৩৫৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতে করোনা মহামারী শুরু হওয়া থেকে এটাই একদিনে সর্বাধিক সংক্রমণ। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রাণহানি। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১,১৮৫ জন। করোনার এই উর্ধ্বমুখী গ্রাফের পেছনে নয়া ভেরিয়েন্টকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গেও হয়েছে রেকর্ড দৈনিক সংক্রমণ। একদিনে সংক্রমিত ৬,৭৬৯ জন। যা বুধবারের থেকে প্রায় ১,০০০-এর বেশি।