দিল্লির প্রশাসন চালানো নিয়ে লেফটেন্যান্ট গভর্নর তথা কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াইয়ে বড় জয় পেলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার সর্বসম্মতিক্রমে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা এবং ভূমি ছাড়া যাবতীয় বিষয়ের ক্ষেত্রে দিল্লি সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকবে। যে সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়েছে। শুধুমাত্র রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত ক্ষমতারই প্রয়োগ করতে পারবেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর। সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গণতান্ত্রিক কাঠামোয় প্রকৃত প্রশাসনিক ক্ষমতা অবশ্যই নির্বাচিত সরকারের হাতে থাকা উচিত।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিল্লিতে শাসনব্যবস্থা চালানোর ক্ষমতা কার হাতে আছে - দিল্লি সরকার নাকি কেন্দ্রীয় সরকার (লেফটেন্যান্ট গভর্নরের মাধ্যমে), তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় যে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত, সেটাকে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির (আপ) বড় ‘জয়’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ আইন-শৃঙ্খলা এবং ভূমি ছাড়া যাবতীয় প্রশাসনিক বিষয়ের উপর কেজরিদের হাতে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ দিল্লি পুলিশের ক্ষমতা থাকছে কেন্দ্রের হাতেই (এখন যেমন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাতে আছে)।
কী কারণে দিল্লি সরকারকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে, সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলেও এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর অংশ। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে রাজ্যের শাসনব্যবস্থা যেন কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে চলে না যায়।’ সেইসঙ্গে তিনি জানান, গণতান্ত্রিক নির্বাচিত একটি সরকারকে যদি নিজের আধিকারিকদের নিয়ন্ত্রণের অধিকার না দেওয়া হয়, তাহলে জবাবদিহিতার পুরো বিষয়টি অকেজো হয়ে যাবে। আধিকারিকরা যদি মনে করেন যে তাঁদের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই, সেক্ষেত্রে জবাবদিহিতার বিষয়টি দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রভাব পড়বে শাসনব্যবস্থায়।
কোন প্রেক্ষিতে সেই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট?
দিল্লিতে আপ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালের মে'তে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে দ্বিতীয় তালিকার 'এন্ট্রি ৪১'-র আওতাভুক্ত (রাজ্যের হাতে ক্ষমতা) 'জনগণের পরিষেবা'-কে দিল্লি সরকারের আইনি ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, রাজ্যের হাতে যে 'জনগণের পরিষেবা' সংক্রান্ত আইনি এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকার কথা আছে, সেটা থাকবে।
শুধুমাত্র সংবিধানের ২৩৯এএ ধারার আওতায় নির্দিষ্টভাবে যে বিষয়গুলি বাদ দেওয়া হয়েছে, সেগুলির ক্ষমতা কেন্দ্রের হাতে থাকবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। যে বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় ছাড়াও ছিলেন বিচারপতি এমআর শাহ, বিচারপতি কৃষ্ণা মুরারি, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি পিএস নরসীমা।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)