আর্থিক তছরুপের মামলায় লস্কর-ই-তৈবার প্রধান মহম্মদ হাফিজ সইদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ফালহা-ই-ইনসানিয়ত (এফআইএফ) নামে জঙ্গি সংগঠনের আর্থিক অংশের সেই মামলায় হাফিজের সহকারী শাহিদ মেহমুদ, দুবাইয়ে টাকা জোগাড়ের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার মহম্মদ কামরান এবং দিল্লির হাওয়ালা অপারেটর মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধেও চার্জশিট জমা পড়েছে।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) তদন্তের ভিত্তিতে মহম্মদ সলমন এবং মহম্মদ সেলিমের আর্থিক তছরুপের তদন্ত শুরু করে ইডি। ২০১৮ সালে তাদের দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়। ইডি জানিয়েছে, অর্থ জোগাড় এবং সন্ত্রাসবাদীর কার্যকলাপের নেটওয়ার্ক আরও বড় করতে এফআইএফকে ব্যবহার করে লস্কর। তদন্ত উঠে এসেছে, পাকিস্তান থেকে দুবাইয়ে অর্থ পাঠানো হত। তারপর তা হাওয়ালার মাধ্যমে ভারতে পৌঁছাত।
লস্করের মূল সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়া তৈরি করেছিল ফালহা-ই-ইনসানিয়ত। যা পাকিস্তানে অবস্থিত। ২০১২ সালের মার্চে এফআইআফকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে রাষ্ট্রসংঘ। বিভিন্ন ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং রাষ্ট্রসংঘ বারেবারে দাবি করেছে, জামাত এবং লস্করেরই অংশ হল এফআইএফ। যা সুরক্ষা ও নিষেধাজ্ঞার বেড়াজাল টপকানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৬ সালের অগস্টে আইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) ফালহা-ই-ইনসানিয়তকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে ভারত।
আর্থিক দুর্নীতির তদন্তকারী সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, কামরান ও তার সহকারী আবদুল আজিজ বেহলিম এবং আরিফ গুলামবশির ধরমপুরিয়া যে টাকা পাঠাত, তা দুবাইয়ে সংগ্রহ করত সলমন। বিদেশ থেকে যে অর্থ জোগাড় করত সলমন, তা নিয়ে হরিয়ানার পালওয়ালে উত্তয়ারের একটি মসজিদ নির্মাণে ব্যবহার করেছিল। একইসঙ্গে উত্তওয়ার গ্রামের আশপাশের গরিব মেয়েদের বিয়েতে সেই অর্থ দিয়েছিল।
ইডির তদন্ত অনুযায়ী, এফআইএফ ও সেটির সদস্যদের মাধ্যমে ৪.৬৯ কোটি টাকা পেয়েছিল সলমন। ইতিমধ্যে নয়াদিল্লিতে তার তিনটি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যেগুলির মোট মূল্য ৭৩.১২ লাখ টাকা। চলতি বছরের গোড়ার দিকেই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আপাতত সলমন এবং সেলিম দু'জনেই জেলে আছে।