কৃষি বিলের সৌজন্যে কী কী 'সুফল' মিলবে, তা আগেও জানিয়েছেন। তাতে অবশ্য কাজ হয়নি। বরং কৃষকদের আন্দোলনের মাত্রা আরও বেড়েছে। তা মধ্যে আবারও কৃষি বিলের স্বপক্ষে ব্যাট ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করলেন, কৃষি বিলের ফলে কৃষকরা নয়া বাজার, নয়া সুযোগ এবং প্রযুক্তির আরও সুফল পাবেন।
ফিকির ৯৩ তম বার্ষিক সাধারণ সভায় মোদী বলেন, 'কৃষিক্ষেত্র এবং সেই সংক্রান্ত খাতের মধ্যে দেওয়াল দেখেছি। তা সে কৃষি পরিকাঠামো, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ বা হিমঘর হোক - আমরা দেওয়াল চাই না। আমরা সেতু চাই। সব দেওয়াল এবং বাধা এখন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংস্কারের পরে কৃষকরা নয়া বাজার, নয়া সুযোগ এবং প্রযুক্তির আরও সুফল পাবেন। তার ফলে আরও বিনিয়োগ আসবে।'
ইতিমধ্যে কৃষকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অবিলম্বে কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা হলে আরও বড় আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। দিল্লির সমস্ত রাস্তা অবরোধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে মোদী দাবি করেন, 'হিমঘরের পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ হবে। তার ফলে কৃষিক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগ আসবে। তার থেকে সবথেকে বেশি লাভবান হবেন কৃষকরা।'
সব ক্ষেত্রের সবপক্ষের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পক্ষে সওয়াল করে মোদী বলেন, 'যদি সরকার আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে অন্যান্যদের জায়গা উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে তা ভয় পায় না। গত ছ'বছর ধরে তা ভারতে হচ্ছে।'
গত মাসের ‘মন কি বাত’-এ সরাসরি কৃষি আইনের সুবিধা ব্যাখ্যা করেছিলেন। দাবি করেছিলেন, কৃষিক্ষেত্রে সংস্কারের ফলে চাষিরা নয়া সুযোগ পেয়েছেন। মোদী বলেছিলেন, ‘ভারতের কৃষি এবং সেই সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে নয়া দিক যোগ হচ্ছে। গত কয়েকদিনে কৃষিক্ষেত্রে যে সংস্কার হয়েছে, তা আমাদের চাষিদের জন্য সম্ভাবনার নয়া দিগন্ত উন্মোচন করেছে।’
মোদী দাবি করেছিলেন, দশকের পর দশক ধরে চাষিদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি। আদতে তা হয়নি। কিন্তু যাবতীয় খুঁটিনাটি বিবেচনার পর সংসদে নয়া কৃষি আইন পাশের মাধ্যমে কৃষকদের সেই দাবি পূরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই সংস্কারের ফলে শুধুমাত্র কৃষকদের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেনি, তাঁদের নয়া অধিকার এবং সুযোগও এনে দিয়েছে। কৃষকরা যে সমস্যার সম্মুখীন হতেন, তা স্বল্প সময়ের মধ্যেই সমাধান করেছে এই অধিকারগুলি।’
মহারাষ্ট্রের কৃষক জিতেন্দ্র ভৌজির কাহিনি তুলে ধরে মোদী দাবি করেছিলেন, এতদিন যে টাকা পাচ্ছিলেন না, নয়া কৃষি আইনের মাধ্যমে তা আদায় করতে পেরেছেন তিনি। চার মাস আগে ফসল বিক্রি করলেও তিনি পুরো টাকা পাননি। কিন্তু নয়া আইনের আওতায় সেই টাকা ফেরত পেয়েছেন জিতেন্দ্র। যে আইন অনুযায়ী, শস্য কেনার তিনদিনের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে চাষিদের টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। মোদী বলেছিলেন, ‘যদি টাকা মেটানো না হয়, তাহলে কৃষক অভিযোগ করতে পারেন। নয়া আইন অনুযায়ী, এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার এসডিএমকে সেই অভিযোগের সমাধান করতে হবে। নয়া আইনের মাধ্যমে কৃষকরা যে ক্ষমতা পেয়েছেন, তার মাধ্যমে যে কোনও সমস্যার সমাধান হবেই। উনি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এবং কয়েকদিনের মধ্যেই নিজের বকেয়া টাকা পেয়ে গিয়েছেন। আইনের বিষয়ে সম্যক জ্ঞান থাকা জরুরি এবং সঠিক তথ্য থাকাও প্রয়োজনীয়।’