রাজধানী এক্সপ্রেসে বায়ো-টয়লেট। স্বচ্ছ ভারতের প্রসার চেয়েছিল রেল। কিন্তু হল উল্টোটা। দুর্গন্ধে দুঃস্বপ্নে পরিণত হল রেলযাত্রা। পুরোটাই সম্ভাব্য 'দুর্নীতি'র কারণে।
গত মাসের ঘটনা। দিল্লি-বিলাসপুর রাজধানী এক্সপ্রেসে যাচ্ছিলেন এক যাত্রী। বায়ো-টয়লেট ব্যবহার করেন। কিন্তু ফ্লাশ করতে গিয়েই বিপত্তি। কমোড থেকে উল্টে ওই ব্যক্তির দিকেই ছিটকে বেরিয়ে আসে ব্যর্জ।
রাগে-লজ্জায় নাকাল অবস্থা হয় ওই যাত্রীর। এরপরেই রেল লিখিত অভিযোগ জানান তিনি। গত ১৫ এপ্রিল রেলের কাছে সেই অভিযোগ জমা পড়ে।
অভিযোগ পাওয়ার এক দিনের মধ্যেই, ওই ত্রুটিপূর্ণ কমোড সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এই একটি ঘটনাই নয়। গত কয়েক মাসে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে রেলের ঘরে। আরও পড়ুন: Station Masters on Mass Leave: ৩১ মে থমকে যাবে সব ট্রেনের চাকা! চরম ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে রেলযাত্রীদেরজরিমানা ঠিকাপ্রাপ্ত সংস্থাকে
'অমিত ইঞ্জিনিয়ার্স' নামে এক সংস্থাকে এই বায়ো-ভ্যাকুয়াম টয়লেটের বরাত দিয়েছিল রেল। রেলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ওই সংস্থাকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়েছে।
তার পাশাপাশি সংস্থার তৈরি সমস্ত টয়লেট পরীক্ষার জন্য একটি অভিযান শুরু করা হয়েছে। রেলওয়ে বোর্ডের নির্দেশ অনুসারে, বায়ো-টয়লেটের কাজ পরীক্ষা করার জন্য অন্যান্য জোনাল রেলওয়েরও অনুরূপ অভিযান চালাতে হবে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এটি সম্পন্ন করা হবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত।
'অমিত ইঞ্জিনিয়ার্স' নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে বহুদিন ধরেই
গত ৬ জানুয়ারি, ২০২১-এ, রেলওয়ে বোর্ডের ভিজিল্যান্স শাখা পরামর্শ দিয়েছিল যে ভ্যাকুয়াম টয়লেট সরবরাহের ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া প্রয়োজন। কোনও জালিয়াতি(Scam) হতে পারে। সেই সময়ে মেসার্স অমিত ইঞ্জিনিয়ার্স এবং অন্য একটি সংস্থাকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
রেলওয়ে বোর্ডের ভিজিল্যান্স সেল এ বিষয়ে তদন্ত করে। এরপরেই কেঁচো খুড়তে কেউটে বেরিয়ে আসে। দেখা যায় বোর্ডের কর্মকর্তা, ইন্টিগ্রেটেড কোচ ফ্যাক্টরি এবং অমিত ইঞ্জিনিয়ার্স-সহ দুটি সংস্থার মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে।রেল কত খরচ করেছে?
ভারতীয় রেল গত বছর পর্যন্ত আড়াই লক্ষেরও বেশি বায়ো-টয়লেট বসিয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অমিত ইঞ্জিনিয়ার্স কতগুলি বায়ো টয়লেট সরবরাহ করেছিল, তা জানা যায়নি। ভারতীয় রেল স্বচ্ছ ভারত মিশনের অংশ হিসাবে ২০১৯ সাল থেকে বায়ো টয়লেট স্থাপন শুরু করেছে।