বিগত ৪-৫ দিন ধরেই হিংসার আগুনে পুড়ছে প্যারিস সহ প্রায় গোটা ফ্রান্স। এক ১৭ বছর বয়সি যুবককে পুলিশের গুলি করার ঘটনা ঘিরে দাঙ্গা ছড়িয়েছে সেদেশে। এই আবহে এবার প্যারিসর উপকণ্ঠের এক ছোট্ট শহরের মেয়রের বাড়িতে হামলা চালাল দাঙ্গাবাজরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, গাড়ি নিয়ে ল'হে-লে-রোজেস শহরের মেয়র ভিনসেন্ট জঁবার্নের বাড়িতে ধাক্কা মারে দাঙ্গাবাজরা। পরে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনায় আহত হয়েছে মেয়রের স্ত্রী এবং সন্তান। জানা গিয়েছে, হামলার সময় মেয়রের পরিবার বাড়িতে ঘুমাচ্ছিল।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ভিনসেন্ট টুইট করে লেখেন, 'গতরাতে আতঙ্ক ও অপমানের একটি মাইলফলকে পৌঁছেছি আমরা।' ভিনসেন্ট টুইট করে অভিযোগ করেন, 'যখন এই হামলা হয়, তখন আমার স্ত্রী ও সন্তানরা ঘুমাচ্ছিল। সেই সময় তাদের খুন করার কাপুরুষোচিত প্রচেষ্টা করা হয়।' এই হামলার পর স্থানীয় পুলিশ এসে পৌঁছায় মেয়রের বাড়িতে। তবে হামলাকারীদের ধরা যায়নি বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশের গুলিতে এক আফ্রিকান বংশোদ্ভূত ফরাসি তরুণের মৃত্যু ঘিরে আগুন জ্বলছে সেদেশে। জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার ট্রাফিক আইন অমান্য করার অভিযোগে এক ১৭ বছরের তরুণকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছিল প্যারিসে। এরপরই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে সেদেশের তরুণ প্রজন্মের একাংশের। এখনও পর্যন্ত এই হিংসার জেরে ৪৯২টি সরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ম্যাক্রোঁ প্রশাসন। এই আবহে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ৪৫ হাজার পুলিশ এবং আধাসেনা নামিয়েছে ফরাসি সরকার।
এদিকে ইতিমধ্যেই সেদেশে ৯০০ জন দাঙ্গাবাজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে, দাঙ্গার জেরে জখম হয়েছেন প্রায় ৩০০ পুলিশকর্মী। 'নেহেল' নামক তরুণকে যে পুলিশকর্মী গুলি করেছিলেন, তাঁর ঠিকানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এদিকে এক কারারক্ষীর আইডি কার্ডের ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই সবের মাঝেই সেদেশের শপিং মল-দোকানে লুঠ চলছে। লিঁয়-র বহুতল আবাসনে আগুন লাগিয়ে দেয় দাঙ্গাবাজরা। এই আবহে দাঙ্গা রুখতে 'সব ধরনের পদক্ষেপ' করার কথা পরিকল্পনা করছে ম্যাক্রোঁ প্রশাসন।
এদিকে এই হিংসার জন্য টিকটক, স্ন্যাপচ্যাটের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে দায়ী করেন সেদেশের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এদিকে ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে 'সংবেদনশীল বিষয়বস্তু' সরিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে হিংসা ছড়াতে উদ্বুদ্ধ করছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করেন ম্যাক্রোঁ।