আগামী ১ অক্টোবর থেকে দেশে চালু হতে পারে নয়া শ্রমবিধি। যে শ্রমবিধিতে সপ্তাহে তিনদিন ছুটি, ন্যূনতম বেতনের নিশ্চয়তা, ‘টেক হোম স্যালারি’ বা হাতে পাওয়া বেতনের পরিমাণ কমে যাওয়ার নিয়ম আছে বলে সূত্রের খবর।
গত ১ এপ্রিল থেকে দেশে নয়া শ্রমবিধি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কয়েকটি রাজ্য সরকারের আপত্তিতে তা সম্ভবপর হয়নি। সূত্রের খবর, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অক্টোবরের পয়লা দিন থেকে নয়া শ্রমবিধি চালু করার লক্ষ্যমাত্রা নিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। একনজরে দেখে নিন সেই নয়া শ্রমবিধির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি -
সপ্তাহে তিনদিন ছুটি :
শ্রম মন্ত্রক সূত্রে খবর, নয়া শ্রমবিধিতে কর্মচারীরা সপ্তাহে তিনদিন ছুটি পেতে পারেন। সবমিলিয়ে সপ্তাহে কাজ করতে হবে। তাতে ন'ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টা শিফট করতে হতে পারে কর্মচারীদের। কোনও কর্মী যদি দৈনিক ঘণ্টা কাজ করেন, তাহলে তাঁকে সপ্তাহে ছ'দিন কাজ করতে হবে। যাঁরা দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজ করবেন, তাঁরা সপ্তাহে তিনদিন ছুটি পাবেন। সেইসঙ্গে প্রতি পাঁচ ঘণ্টা একটানা কাজের পর ৩০ মিনিটের বিরতি নেওয়া যাবে।
কমবে ‘টেক হোম স্যালারি, বাড়বে প্রভিডেন্ট ফান্ড :
নয়া শ্রমবিধিতে বেতনের কাঠামোয় পরিবর্তন করা হতে পারে। সেই বিধি অনুযায়ী, কর্মচারীরা যে বেতন পান, তার ৫০ শতাংশের বেশি হতে হবে ‘বেসিক স্যালারি’। সেরকম হলে প্রভিডেন্ট ফান্ডের বেশি টাকা পড়বে। কিন্তু টেক হোম স্যালারি’ বা হাতে পাওয়া বেতনের পরিমাণ কমতে পারে।
অর্থাৎ নয়া শ্রমবিধি যদি কার্যকর হয়, তাহলে কর্মচারীদের মাসিক ভাতা (অ্যালোয়েন্স) ৫০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। সেই ৫০ শতাংশের মধ্যে ট্র্যাভেল অ্যালোয়েন্স, হাউজ রেন্ট, ওভারটাইমের মতো-যাবতীয় ভাতা (অ্যালোয়েন্স) দিতে হবে। তার ফলে কর্মীদের সিটিসি বা ‘কস্ট টু কোম্পানি’-এর (যে টাকায় চুক্তি হচ্ছে) কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। বেতন সংক্রান্ত শ্রমবিধিতে ‘মজুরি’-র সংজ্ঞা অনুযায়ী, তিনটি বিষয় থাকবে - বেসিক পে (মূল বেতন, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সেটির যোগ থাকবে), মহার্ঘভাতা (ডিয়ারনেস অ্যালোয়েন্স বা ডিএ) এবং রিটেনশন পেমেন্ট।
ন্যূনতম বেতনের নিশ্চয়তা :
নয়া শ্রমবিধিতে দেশজুড়ে ন্যূনতম বেতন করা হবে। তার ফলে লাভবান হবেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। দেশের সংগঠিত এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত কর্মীরা এমপ্লয়িজ স্টেট ইনসিওরেন্সের আওতায় আসবেন। নয়া শ্রমবিধির আওতায় মহিলারা নাইট শিফট করতে পারবেন।
অবসরের পর সুবিধা :
প্রভিডেন্ট ফান্ড বৃদ্ধি পেলে স্বভাবতই অবসরের পর হাতে বেশি টাকা আসবে। নয়া শ্রমবিধি শ্রমবিধি অনুযায়ী, নিয়োগকারী এবং কর্মচারীকে সমপরিমাণে পিএফে টাকা দিতে হবে। তার ফলে লাভবান হবেন কর্মীরা।