গতবছর জুন মাসে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের গুলিতে খুন হয়েছিল খলিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর। এবার সেই নিজ্জরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত খলিস্তানপন্থী সিমরনজিৎ সিংয়ের বাড়িতে চলল গুলি। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময়ে ভোররাত নাগাদ সিমরনজিতের বাড়িতে গুলি চলে। এদিকে এই হামলার কারণ সন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশের গোয়েন্দারা। এদিকে ইতিমধ্যেই কানাডার খলিস্তানি সংগঠনগুলি এই হামলার জন্য ভারতের দিকে আঙুল তুলেছে। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া গুরুদ্বার কাউন্সিলের মুখপাত্র মনিন্দর সিং এই বিষয়ে বলেন, 'মনে হচ্ছে ভারতই এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে। সিমরমজিৎকে ভয় পাইয়ে দিতেই হয়ত এই হামলা চালানো হয়।' তবে সাম্প্রতিককালে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারে অঞ্চলে এই ধরনের হামলার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দির কমিটির সভাপতি সতীশ কুমারের ছেলের বাড়িতে গুলি চালানো হয়েছিল। (আরও পড়ুন: ভারত-মলদ্বীপ বিতর্কের মাঝে নড়বড়ে মুইজ্জুর গদি! এই নিয়ে কী বলছে দিল্লি?)
আরও পড়ুন: লাদাখে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ রুখেছিল মেষপালকরা, সেই ঘটনা নিয়ে কী বলল দিল্লি?
উল্লেখ্য, কানাডায় নিজ্জর খুনের পর ভারত-কানাডার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। দুই দেশই একে অপরের কূটনীতিকদের বরখাস্ত করেছিল। পরে দিল্লির চাপে ভারত থেকে নিজেদের ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নিয়েছিল কনাডা। প্রসঙ্গত, জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের পরপরই নিজের দেশের সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেছিলেন, কানাডায় বসবাসকারী খলিস্তানি জঙ্গি হরদীপ নিজ্জরের হত্যায় নাকি ভারতের যোগ থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও কোনও প্রমাণ পেশ করতে পারেনি কানাডা। পরে এক রিপোর্টে দাবি করা হয়, কানাডার পুলিশ বা তদন্তকারী সংস্থা এখনও কোনও ভারতীয় নাগরিকে এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে চিহ্নিত করতে পারেনি। সেই সময়ে ভারত থেকে কোনও 'এজেন্ট' কানাডায় গিয়েছে বলেও নিশ্চিত হতে পারেনি কানাডার পুলিশ। (আরও পড়ুন: USA থেকে ৪ বিলিয়ন ডলারের ৩১টি ঘাতক ড্রোন আসবে ভারতে, শিলমোহর মার্কিন কংগ্রেসের)
আরও পড়ুন: বিতর্কের মাঝে মলদ্বীপের জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ল ৫০ শতাংশ! খরচের অঙ্ক জানেন কত?
জানা যায়, গত ২০২৩ সালের জুন মাসে গুরুদ্বারের ভেতরেই গুলি করে হত্যা করা হয় খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরকে। হরদীপকে ২০ বারেরও বেশি গুলি করা হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশের পঞ্জাবি অধ্যুষিত সারে অঞ্চলে থাকত হরদীপ। বিগত কয়েকবছরে কানাডার ভ্যানকুবারে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে খলিস্তানি বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিল এই হরদীপ। কানাডায় মৃত হরদীপের বিরুদ্ধে এনআইএ-র চারটি মামলা ছিল। এক হিন্দু পুরোহিতকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র সহ খলিস্তানি যোগের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। গতবছর জুলাইতেই হরদীপের মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ধার্য করেছিল এনআইএ। জানা যায়, হরদীপ খলিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান ছিল। গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের 'শিখস ফর জাস্টিস' সংগঠনের মতাদর্শ প্রচারের দায়িত্ব ছিল হরদীপের টাইগার ফোর্সের ওপর।