হিমাচলপ্রদেশে অতিবৃষ্টির জেরে ধস নামে শিমলা সহ বহু জায়গায়। বহু বিল্ডিং ভেঙে পড়ে এর জেরে। এখনও পর্যন্ত এই বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে ৭১ জনের। আর এরই মাঝে এই বিপর্যয় নিয়ে আলটপকা মন্তব্য করে বসেন হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, 'যে বাড়িগুলি ভেঙে পড়েছে, সেগুলির নির্মাণের সঠিক মান অনুযায়ী তৈরি করা হয়নি। পরিযায়ী নির্মাণকর্মী, যাদের আমি বিহারি আর্কিটেক্ট বলি... তারাই এখানে এসে এসব বানায়। একটা ফ্লোরের ওপর আরেকটা ফ্লোর তৈরি করতে থাকে।' তাঁর এহেন মন্তব্যে জোর বিতর্ক শুরু হয়। এরপরই নিজের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সাফাই দেন সুখবিন্দর।
বিতর্কিত মন্তব্যের সাফাই দিতে গিয়ে সংবাদসংস্থা এএনআই-কে হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি তেমন কিছু বলিনি। বিহারের মানুষও এখানে আটকে ছিলেন। আমি তাঁদের হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নিয়ে এসেছি। বিহারের প্রায় ২০০ জন মানুষ এখনও এখানে আটকে আছেন এখানে। তাঁরা আমাদের ভাইয়ের মতো। এটা আমাদের স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দোষ। তাঁরা (বিহার থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিক) তো শুধুই নির্মাণকর্মী।'
এর আগে গত সোমবার সিমলাতে প্রবল ধসের জেরে একটি মন্দির ভেঙে যায়। গতকালও সিমলার সেই সামারহিলের শিব মন্দিরে নিখোঁজদের উদ্ধার করার কাজ চলে। তাতে মৃত্যু হয়েছিল বহু পুণ্যার্থীর। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও লোকজন চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সিমলার কৃষ্ণনগরেও ধস নামে। সেখানে অন্তত ৬টি বিল্ডিং ধসে পড়ে অতিবৃষ্টির জেরে। আটকে পড়েন বহু মানুষ। মৃত্যু হয় বহু মানুষের। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও এই বিপর্যয়ে সেই রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭১ জনের।
মূলত পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া দফতর। এদিকে এই আবহে ধসপ্রবণ এলাকায় সাধারণ মানুষকে যেতে বারণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সংকটের সময় পর্যটকরা যাতে হিমাচল প্রদেশে না যান সেজন্যও তিনি আবেদেন করেছেন। ধস ও প্রবল বৃষ্টির জেরে অন্তত ৭০০ রাস্তা অবরূদ্ধ হয়ে যায়। শিমলা ও চন্ডীগড়ের মধ্যে সংযোগকারী জাতীয় সড়কও বন্ধ হয়। সমস্ত স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়। প্রশাসনের হিসাবে কয়েক হাজার কোটির ক্ষতি হয়েছে এবারের বৃষ্টিতে।