ন্যাশনাল হেরাল্ড দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাহুল ও সোনিয়া গান্ধীকে গতবছরই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা জেরা করেছিলেন। রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের নামে চিনের থেকে অনুদান নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে। ইউপিএ জমানায় একের পর এক দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছিল। তবে নিজের সততা তুলে ধরতে রাহুল গান্ধী রবিবার রায়পুরে দাবি করলেন, ৫২ বছর বয়সে, আজও তাঁর নিদের কোনও বাড়ি নেই। সরকারের দেওয়া সাংসদ নিবাস ছাড়া তাঁর থাকার কোনও জায়গা নেই।
রবিবার রাহুল বলেন, '১৯৭৭ সাল। আমি নির্বাচনের বিষয়ে কিছু জানতাম না। তখন আমার বয়স মাত্র ৬ বছর। একদিন বাড়িতে খুব অদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমি মায়ের কাছে গেলাম। আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, কী হয়েছে? মা আমাকে বললেন যে আমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি। ততদিন আমি ভাবতাম যে ওই বাড়িটা আমদের নিজেদের। তখন আমি মাকে আবার প্রশ্ন করলাম, আমরা আমাদের বাড়ি কেন ছাড়ছি? তখন প্রথমবার মা আমাকে বোঝালেন যে এটা আমাদের নিজেদের বাড়ি নয়। এটা সরকারের বাড়ি। এখন আমাদের এখান থেকে চলে যেতে হবে। তখন আমি মাকে আবার প্রশ্ন করলাম, আনরা কোথায় যাব? তখন মা জবাব দিলেন, জানি না কোথায় যাব। আমি অবাক হয়ে গেলাম। আমি ভেবেছিলাম যে ওটা আমাদের বাড়ি। আমার এখন ৫২ বছর বয়স। আমার নিজের এখনও কোনও বাড়ি নেই। আমাদের এলাহাবাদে যে বাড়ি আছে, ওটাও আমাদের নয়।'
এদিকে নরেন্দ্র মোদীকে তোপ দেগে রবিবার রাহুল দাবি করেন, 'মোদী কাশ্মীরকে বোঝেন না।' উল্লেখ্য, গত জানুয়ারিতে শ্রীনগরে গিয়ে ভারত জোড়ো যাত্রা সম্পন্ন করেন রাহুল। সম্প্রতি সেখানে ছুটিও কাটিয়ে এসেছেন। রাহুলের পূর্বপুরুষ কাশ্মীরি পণ্ডিত। এহেন রাহুল বলেন, 'কাশ্মীরে যখন ঢুকলাম উপত্যকায় বরফ ছিল, রোদ ছিল। হাজার হাজার লোক আমাদের সঙ্গে হাঁটছে। একজন আমার কাছে এসে বলল, রাহুলজি একটা প্রশ্ন, যখন কাশ্মীরের মানুষের কষ্ট হয়, বাকি ভারতের এত আনন্দ কেন হয়? আমি বললাম, ভুল বুঝছেন। প্রত্যেক ভারতীয় আপনাদের সঙ্গে আছেন। কিছু বাছাই করা লোক আছে, যাঁরা খুশি হন আপনাদের দুঃখে। তাঁদের সংখ্যা হাজার হবে। কিন্তু দেশের নাগরিক কোটি কোটি।' রাহুল এদিন কাশ্মীর প্রসঙ্গে আরও বলেন, 'পুলিশ বলেছিল ২ হাজার লোক আসবে। আমার নিরাপত্তাকর্মীরাও তাই ভেবেছিলেন। কিন্তু ৪০ হাজার লোক এল। পুলিশ ৪০ হাজার লোক দেখে দড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেল। অনন্তনাগ, পুলওয়াামার মতো জঙ্গি অঅধ্যুষিত এলাকাতেও হাজার হাজার মানুষ তেরঙ্গা নিয়ে আমাদের সঙ্গে হেঁটেছেন। সংসদে প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমি গিয়ে ললাচৌকে তেরঙ্গা উত্তোলন করেছি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীরকে বোঝেননি। নরেন্দ্র মোদী বিজেপির ২০ জন সদস্যের সঙ্গে গিয়ে লালচৌকে তেরঙা উত্তোলোন করেছেন। আর ভারত জোড়ো যাত্রায় লক্ষ লক্ষ কাশ্মীরি যুবকের হাতে ছিল এই তেরঙ্গা। প্রধানমন্ত্রী এই পার্থক্যটা বুঝতে পারেননি।'